কক্সবাজারে দুই ট্রলারে ধরা পড়ল ৭২ লাখ টাকার ইলিশ

কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীতে আসা ট্রলার থেকে ডিঙিতে ইলিশ খালাস করে আনা হচ্ছে ফিসারিঘাটের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে
ছবি: প্রথম আলো

সাগর উত্তাল থাকায় গত চার দিনে কক্সবাজার উপকূলে ইলিশ আহরণ কিছুটা কমে গিয়েছিল। গতকাল বুধবার থেকে জেলেদের জালে আবার ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ। গতকাল সকালে শহরের বাঁকখালী নদীর ফিসারিঘাটে ভিড়েছে ২৫টির বেশি ট্রলার। এর মধ্যে নতুন ফিসারিঘাট (মগচিতাপাড়া) এলাকার আবদুল মালেকের দুটি ট্রলারে ধরা পড়েছে ৭ হাজার ২৩০টি ইলিশ। ইলিশগুলো তিনি ৭২ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন।

আবদুল মালেক (৫৫) বলেন, উপকূল থেকে বঙ্গোপসাগরের ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার পশ্চিমে জাল ফেলে তাঁর দুই ট্রলার। দুই ট্রলারে জেলে ছিলেন ৪৩ জন। একটি ট্রলারের জালে ধরা পড়া ৩ হাজার ৭৩০টি ইলিশ বিক্রি করে পাওয়া গেছে ৩৭ লাখ টাকা। আরেকটি ট্রলারের জালে ধরা পড়া ৩ হাজার ৫০০টি ইলিশ বিক্রি করে পাওয়া গেছে ৩৫ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন

আজ বৃহস্পতিবার সকালে গভীর সাগর থেকে ইলিশ ধরে ফিসারিঘাটে ভিড়েছে ২০টির বেশি ট্রলার। তবে সাগর উত্তাল থাকায় ছোট ট্রলারগুলো গভীর সাগরে গিয়ে ইলিশ ধরতে পারছে না। বর্তমানে ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ ধরতে কক্সবাজারের ছোট-বড় প্রায় ছয় হাজার ট্রলার সাগরে অবস্থান করছে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অন্তত ১০ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আহরণের আশা করছেন জেলে ও ট্রলারমালিকেরা।

কক্সবাজার ফিসারিঘাট থেকে ইলিশ মাছ পাঠানো হচ্ছে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে
ছবি: প্রথম আলো

আবদুল মালেকের ট্রলারের মাঝি (সেরাং) শহিদুল ইসলাম (৪৫) বলেন, জালে ধরা পড়া অধিকাংশ ইলিশের ওজন ১ কেজি থেকে ১ কেজি ২০০ গ্রাম। ফিসারিঘাটের পাইকারি মাছের বাজারে প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায়। এক কেজির কম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে ৯৫০ টাকায়।

ফিসারিঘাটের ইলিশ ব্যবসায়ী ওমর কাজী বলেন, গতকাল প্রায় ৩০টি ট্রলারের জেলেরা ৪৫ মেট্রিক টনের বেশি ইলিশ বিক্রি করেছেন। অধিকাংশ ইলিশ ট্রাকে বোঝাই করে ঢাকায় সরবরাহ করা হয়েছে।

টেকনাফ, সেন্ট মার্টিন, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া, পেকুয়াসহ জেলার বিভিন্ন মৎস্যকেন্দ্র থেকেও দৈনিক প্রায় ২০০ মেট্রিক টন ইলিশ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। গত ১৭ দিনে কক্সবাজারে প্রায় ছয় হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ হয়েছে জানিয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান বলেন, আগামী সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে সাগরে আরও ইলিশ ধরা পড়বে।

কক্সবাজার ফিশিংবোট মালিক সমিতির সভাপতি মুজিবুর রহমান বলেন, বিপুল পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ায় উপকূলের জেলে পরিবারে খুশির বন্যা বইছে। কারণ, দীর্ঘ ছয় মাস কক্সবাজার উপকূলে খুব বেশি ইলিশ ধরা পড়েনি। কিন্তু ইলিশের দাম বেশি হওয়ায় স্থানীয় অনেকে কিনে খেতে পারছেন না। ইলিশের বাজার নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে ঢাকা থেকে।