সাংবাদিক দেখে ভুবন চিল ফেলে পালালেন বিক্রেতা

উদ্ধার করা ভুবন চিলটিকে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বন বিভাগের রেঞ্জ কার্যালয়েছবি: সংগৃহীত

অসুস্থ ভুবন চিলটিকে ধরেছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি পাখিটি বিক্রির চেষ্টা করছিলেন। ক্রেতা সেজে ওই ব্যক্তির কাছে যান দুই সাংবাদিক। পরিচয় জানার পর পাখিটি ফেলে পালিয়ে যান ওই ব্যক্তি। আজ মঙ্গলবার বিকেলে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের খেজুরিছড়া চা–বাগানে ওই ঘটনা ঘটে।

পরে স্ট্যান্ড ফর আওয়ার এনডেঞ্জার্ড ওয়াইল্ডলাইফের সদস্যদের মাধ্যমে ভুবন চিলটিকে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

স্থানীয় দুই সাংবাদিক বাবলু আচার্য ও তিমির বণিক ভুবন চিলটিকে উদ্ধারে ভূমিকা রেখেছেন। বাবলু আচার্য প্রথম আলোকে বলেন, ভুবন চিল বিক্রির জন্য ক্রেতা খুঁজছিলেন এক ব্যক্তি। বিষয়টি তাঁরা জানতে পারেন। বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে পাখিটির অবস্থান সম্পর্কে তাঁরা নিশ্চিত হন। ক্রেতা সেজে তাঁরা আজ বিকেলে খেজুরিছড়া চা–বাগানে ওই দুই ব্যক্তির কাছে যান। সাংবাদিক পরিচয় দিলে দুজন পাখি ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যান। এরপর ভুবন চিলটিকে তাঁরা উদ্ধার করে আনেন।

স্ট্যান্ড ফর আওয়ার এনডেঞ্জার্ড ওয়াইল্ডলাইফের সমন্বয়ক সোহেল শ্যাম বলেন, ‘বন্য প্রাণী রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। দুই সাংবাদিক যেভাবে এগিয়ে এসেছেন, আমরা তাঁদের সাধুবাদ জানাই। উদ্ধার হওয়া পাখিটি কিছুটা অসুস্থ। এটি প্রাপ্তবয়স্ক নয়। দুই সাংবাদিকের কাছ থেকে পাখিটি নিয়ে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছি। এটি এখন লাউয়াছড়া রেসকিউ সেন্টারে আছে। পুরোপুরি সুস্থ হলে বন বিভাগ এটি অবমুক্ত করবে।’

সোহেল শ্যাম জানান, ভুবন চিলের ইংরেজি নাম ব্ল্যাক কাইট। এর বৈজ্ঞানিক নাম Milvus migrans। এই পাখি অনেক বড় হয়ে থাকে। এদের ডানা দীর্ঘ ও সুচালো; তা লেজের আগা পর্যন্ত পৌঁছে যায়। ভুবন চিল প্রায় ৬৬ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়। এদের কালচে-বাদামি দেহ ও ডানায় কালো ছোপ থাকে। শীত মৌসুমে বিপুল সংখ্যায় এদের দেখতে পাওয়া যায়। এরা পর্বত, নদীর পাড়, বেলাভূমি নগর, শহর ও গ্রামে বিচরণ করে। সচরাচর ছোট দলে লোকালয়ে থাকে। এদের খাবার তালিকায় বর্জ্যস্তূপ, মাছের বাজারের উচ্ছিষ্ট ও ফেলে দেওয়া বর্জ্য।