রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পোষ্য কোটা’ ইস্যুকে কেন্দ্র করে সহ-উপাচার্য, প্রক্টরসহ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের স্থায়ী বহিষ্কার, রাকসু নির্বাচনের প্রার্থিতা বাতিলসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (ইউট্যাব)। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনের টিচার্স লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানায় সংগঠনটি।
সংগঠনটির বাকি তিনটি দাবি হলো, লাঞ্ছনার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ; শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক রাকসু নির্বাচন করার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত ও শিক্ষকদের মর্যাদা রক্ষায় স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সংগঠটির সভাপতি অধ্যাপক মো. মামুনুর রশিদ। তিনি বলেন, ২০ সেপ্টেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় সন্ত্রাসী শিক্ষার্থী কর্তৃক শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ায় ইউট্যাব ঘোষিত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের আহ্বানে সহ-উপাচার্যদ্বয়ের উপস্থিতিতে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম এবং জিয়া পরিষদের শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সভায় উপাচার্য দ্রুত সময়ের মধ্যে সন্ত্রাসীদের দৃশ্যমান শাস্তির ব্যবস্থা করবেন বলে মৌখিক প্রতিশ্রুতি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১৬ অক্টোবর আসন্ন রাকসু নির্বাচন কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ইউট্যাবের শাটডাউন কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করা হলো।
রাকসু নির্বাচনের আগে আবার কোনো কর্মসূচি দেওয়া হবে কি না, এক প্রশ্নের জবাবে মামুনুর রশিদ বলেন, ‘প্রশাসন আমাদের জানিয়েছে, নির্বাচনের আগেই এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যদি সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তাহলে ইউট্যাব কর্মসূচি দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছে না।’
রাকসু নির্বাচনের বিষয়ে ইউট্যাবের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে। আমরাও চাই নির্বাচন হোক, এর মাধ্যমে জাতীয় রাজনীতিতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা পূরণ হবে। আমাদের কর্মসূচি নির্দিষ্ট দাবির জন্য। তা ছাড়া রাকসু নির্বাচনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট একটা কমিশন আছে। তারা যদি নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ তৈরি করতে পারে, তাহলে ১৬ অক্টোবর নির্বাচন হবে।’
এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর ১০ শর্তে ‘পোষ্য কোটা’ ফিরিয়ে আনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। একপর্যায়ে গত শনিবার জুবেরী ভবনে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরপর জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম ও কর্মকর্তারা কর্মবিরতিতে যান। ২৪ সেপ্টেম্বর দুই দাবিতে সাত দিনের সময়সীমা দিয়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অন্যদিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাসে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম আপাতত কর্মবিরতি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে।