নৌকার প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক দম্পতি

সিরাজগঞ্জ জেলার মানচিত্র

সিরাজগঞ্জ-১ (সদরের একাংশ ও কাজীপুর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য তানভীর শাকিলের নির্বাচনী প্রচারে নেমেছেন স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক দম্পতি। তাঁরা হলেন কাজীপুর উপজেলার খাসরাজবাড়ি ইউনিয়নের মেওয়াখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক গোলাম রব্বানী ও তাঁর স্ত্রী রাজবাড়ি দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেহানা খাতুন।

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে শিক্ষক দম্পতির এমন নির্বাচনী প্রচারের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি নিয়ে স্থানীয় মহলে বেশ আলোচনা হচ্ছে।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের নির্বাচনের প্রচার অংশ না নেওয়ার বিষয়ে পরিপত্র জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এটি বাস্তবায়নের জন্য নির্বাচন কমিশন মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশও দিয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, গোলাম রব্বানী ও তাঁর স্ত্রী রেহানা খাতুন শুধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নন, এই দম্পতি আওয়ামী লীগের দলীয় পদেও আছেন। গোলাম রব্বানী খাসরাজবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং তাঁর স্ত্রী রেহেনা খাতুন কাজীপুর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাঁরা দুজন এবার নির্বাচনের দলের পরিচালনা কমিটির সদস্যও হয়েছেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম আবদুর রহমান বলেন, একজন সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে দলীয় পদে থাকার তো প্রশ্নই আসে না। এ বিষয় ইসির কড়া নির্দেশ রয়েছে, স্কুল-কলেজের শিক্ষক বা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবেন না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবি এবং ভিডিওতে এই শিক্ষক দম্পতিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে খাসরাজবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে মিছিল, উঠান বৈঠক ও প্রচারপত্র বিলি করতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোলাম রব্বানী বলেন, ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে নির্বাচনী প্রচারণার মাঠে নেমেছিলাম। তবে একজন শিক্ষক হিসেবে এটা যে করা যাবে না, আমার জানা ছিল না।’ রেহানা খাতুন বলেন, ‘উপজেলায় এমন অনেকেই আছেন।’
কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।