লংগদুতে দুই পক্ষের গোলাগুলি, নিহত ১

গোলাগুলি
প্রতীকী ছবি

রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) মধ্যে গোলাগুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার লংগদু সদর ইউনিয়নের ছোট কাট্টলী মোন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

নিহত ব্যক্তির নাম শ্যামল চাকমা ওরফে ভীম চাকমা (৩৪)। তিনি নানিয়ারচর উপজেলার নানিয়ারচর ইউনিয়নের গবছড়ি গ্রামের ফুলেশ্বর চাকমার ছেলে। ইউপিডিএফের রাঙামাটি ইউনিট প্রধান শান্তি দেব চাকমা দাবি করেছেন, নিহত শ্যামল ইউপিডিএফের সদস্য। এ ঘটনায় একজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত ব্যক্তির নাম কয়েন চাকমা (৩৫)। তাঁর বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলায়।

এ বিষয়ে ইউপিডিএফের কয়েকজন সদস্য বলেন, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ছোট কাট্টলী মোন এলাকায় ইউপিডিএফের ১০–১৫ জনের একটি দল ঘোরাফেরা করছিল। এ সময় জেএসএসের একটি দল অতর্কিতে তাদের আক্রমণ করে। আত্মরক্ষার্থে ইউপিডিএফের সদস্যরাও পাল্টা গুলি করেন। এরপর উভয় পক্ষের মধ্যে আধা ঘণ্টা গোলাগুলি চলে।

গোলাগুলির ঘটনার পর ইউপিডিএফের ছয় কর্মী নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ জানিয়েছে, গোলাগুলির ঘটনাস্থলে অন্তত সাত থেকে আট জায়গায় রক্তের ছোপ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের তাজা গুলি ও গুলির খোসা পাওয়া গেছে।

ইউপিডিএফের একাধিক সদস্য বলেন, ঘটনার পর গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে নিহত ও আহত ব্যক্তিকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। এর মধ্যে আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। অন্যদিকে শ্যামল চাকমার লাশ গোপন স্থানে রাখা হয়। পরে আজ সকালে ত্রিপুরাছড়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় লাশ গবছড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।

ইউপিডিএফের রাঙামাটি ইউনিট প্রধান শান্তি দেব চাকমা বলেন, ‘জেএসএসের হামলায় আমাদের একজন কর্মী নিহত হয়েছে। বিনা উসকানিতে আমাদের দলের কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। আমরা চাচ্ছি ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধ করতে। কিন্তু জেএসএস তা চায় না।’

তবে পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা গোলাগুলিতে এক ব্যক্তি নিহতের বিষয়ে কোনো তথ্য জানাতে পারেননি। লংগদু সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাধন কুমার চাকমা বলেন, ‘আমাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী (পুলিশ) ঘটনাস্থলে নিয়ে গেছে। সেখানে গিয়ে যেটা দেখেছি, বিভিন্ন স্থানে রক্ত, গুলির খোসা, ব্যাগসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম পড়ে আছে। রক্ত দেখে মনে হয়েছে বেশ কয়েকজন মানুষ হতাহত হয়েছেন।’

লংগদু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সানজিত আহমেদ বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে। সেখানে কোনো লাশ পাওয়া যায়নি। তবে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক রক্তের চিহ্ন পাওয়া গেছে।