ফরিদপুরে ব্যাটারি বিক্রির সূত্র ধরে ইজিবাইকচালক হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার: পুলিশ সুপার

ফরিদপুর জেলার মানচিত্র

ফরিদপুরে চালককে হত্যার পর ইজিবাইক ছিনতাইয়ের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান এসপি মো. শাহজাহান। তিনি জানান, ইজিবাইকের ব্যাটারি বিক্রির সূত্র ধরে ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত ২৫ জানুয়ারি ভোরে সদরপুর উপজেলার চরমানাইর ইউনিয়নের রহমতউল্যাহ মাতুব্বরের কান্দি গ্রামে আড়িয়াল খাঁ নদের পারের একটি শর্ষেখেত থেকে ইজিবাইকচালক শাহজাহান ব্যাপারীর (৪০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শাহজাহান মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের মিয়াজান ব্যাপারীকান্দি গ্রামের আমিন ব্যাপারীর ছেলে ছিলেন। এ ঘটনায় ১ ফেব্রুয়ারি নিহতের চাচাতো ভাই আক্কাস আলী বাদী হয়ে সদরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান বলেন, এই হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার রাজাচর গ্রামের মো. আজিজুল মুন্সী (৩২) ও একই উপজেলার শরীফকান্দি গ্রামের মো. হৃদয় মাতুব্বরকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে ঢাকা ও শিবচর থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের বর্ণনা দিতে গিয়ে ফরিদপুরের এসপি বলেন, ২৪ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওই দুই ব্যক্তিসহ মোট ৩ জন শাহজাহানের ইজিবাইকটি বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরার জন্য ভাড়া নেন। রাত দেড়টার দিকে তাঁরা ফরিদপুরের সদরপুরের চরমানাইর ইউনিয়নের আড়িয়াল খাঁ নদের পারে যান। সেখানে ইজিবাইকের চালককে একটি শর্ষেখেতে নিয়ে গলায় গামছা ও মাফলার পেঁচিয়ে হত্যা করে ইজিবাইকটি নিয়ে চলে যান তাঁরা। পরে হত্যাকারীরা ইজিবাইকের পাঁচটি ব্যাটারি খুলে একটি রিকশাভ্যানে করে ভাঙ্গা জামে মসজিদসংলগ্ন আবদুল শেখ নামে এক ব্যক্তির ব্যাটারির দোকানে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। ইজিবাইকটি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ফতেপট্টি এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ব্যাটারি ক্রেতা আবদুল শেখকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।

ব্যাটারির ক্রেতা আবদুল শেখের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২৩ আগস্ট ঢাকা ও শিবচরে অভিযান চালিয়ে মো. আজিজুল মুন্সী ও মো. হৃদয় মাতুব্বরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ভ্যানচালক মুকসুদপুরের ফতেপট্টির আয়নাল শেখ আসামিদের শনাক্ত করেন। আসামিরা তাঁর রিকশাভ্যানে করে ইজিবাইকের ব্যাটারি ভাঙ্গায় এনে বিক্রি করেছিলেন।

পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান আজ দুপুরে বলেন, আসামি মো. আজিজুল মুন্সী ও মো. হৃদয় মাতুব্বরকে আজ বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হবে। তাঁরা এ হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি না দিলে তাঁদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এমদাদ হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও তদন্ত) শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাহউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) তালাত মাহমুদ শাহান শাহ, পরিদর্শক ট্রাফিক তুহিন লস্কর, সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন আল রশিদ, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওহিদুল ইসলাম প্রমুখ।