‘এটি শুধু বিচারহীনতার নয়, সরকারের দেউলিয়াপনার উদাহরণও’

তানভীর মুহাম্মদ ওরফে ত্বকী হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার শুরু করার দাবি জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট মোম শিখা প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তন প্রাঙ্গণে
ছবি: প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জে হত্যার শিকার মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ওরফে ত্বকীর বাবা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি বলেছেন, ত্বকীর ঘাতক কারা, তদন্তে বিষয়টি উঠে এসেছে। কিন্তু তাঁরা সরকারদলীয় বলে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হচ্ছে না। এটা শুধু বিচারহীনতার নজিরই নয়, এটি সরকারের দেউলিয়াপনার উদাহরণ।

ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১২৫ মাস উপলক্ষে আয়োজিত মোমশিখা প্রজ্বালন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট এ আয়োজন করে।

সংগঠনের সভাপতি ভবানী শংকর রায়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এ বি সিদ্দিক, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ, ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, সিপিবি শহর কমিটির সভাপতি আবদুল হাই শরীফ, বাসদের জেলা সদস্যসচিব আবু নাইম, উদীচীর জেলা সভাপতি জাহিদুল হক, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি হাফিজুর রহমান, সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি জিয়াউর ইসলাম ও প্রদীপ ঘোষ।

আরও পড়ুন

রফিউর রাব্বি বলেন, সরকার দেশে নিয়ন্ত্রিত বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। আদালতকে ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার বানিয়েছে। মানুষের বিচার পাওয়ার সাংবিধানিক অধিকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রাষ্ট্রকে হুমকির মুখে ফেলেছে। আর সে জন্যই সাড়ে ১০ বছরেও ত্বকী হত্যার বিচার শুরু হয় না, ১০০ বারেও সাগর-রুনী হত্যার অভিযোগপত্র আদালতে জমা পড়ে না। তদন্ত শেষ করে ১০ বছর আগে ত্বকী হত্যার অভিযোগপত্র তৈরি করে রাখা হলেও, ঘাতক সরকারদলীয় বলে তা আদালতে জমা দেওয়া হচ্ছে না।

আরও পড়ুন

আওলাদ হোসেন বলেন, অপরাধ সংঘটনের ৯০ দিনের মধ্যে অভিযোগপত্র দেওয়ার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকলেও সাড়ে ১০ বছরে ত্বকী হত্যার বিচার শুরু না হওয়া, সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ দায় সরকারকে নিতে হবে।  

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরের শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় ত্বকী। ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। এর পর থেকে ত্বকী হত্যার বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।

আরও পড়ুন