ভোটকেন্দ্র ফাঁকা, পরিদর্শনে এসে বাইরে থেকেই ফিরে যান জেলা প্রশাসকসহ কর্মকর্তারা

ভোটকক্ষ পরিদর্শন না করেই ফিরে যান জেলা প্রশাসকসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বুধবার সকাল ১০টার দিকে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার গাবতলী পাইলট উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রেছবি: সোয়েল রানা

বগুড়ার গাবতলী উপজেলার গাবতলী পাইলট উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের বাইরে আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে প্রায় অর্ধশত মানুষের জটলা দেখা যায়। তবে কেন্দ্রের ভেতর ছিল ফাঁকা। কেন্দ্রের ১০টি ভোটকক্ষে ভোটার চোখে পড়েনি। অলস সময় পার করছিলেন ভোট গ্রহণের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা।

এমন সময় কেন্দ্রে গাড়িবহর নিয়ে পরিদর্শনে আসেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহমুদ হাসানসহ কর্মকর্তারা। পরে কেন্দ্রের ভেতরে পরিদর্শন না করেই তাঁরা ফিরে যান। ফিরে যাওয়ার আগে কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সহিংসতা এড়াতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, কেন্দ্রে ৩ হাজার ৮৮৭ জন ভোটারের মধ্যে সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ১১০ জন। প্রতি ঘণ্টায় প্রতিটি ভোটকক্ষে ভোট পড়েছে গড়ে পাঁচটি।

বেলা পৌনে ১১টার দিকে সোনারায় উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, পুরুষ কেন্দ্রের প্রতিটি কক্ষে অস্বাভাবিক ভোট পড়েছে। একটি কক্ষে থাকা বাক্স ব্যালট পেপারে ঠাসা। এ সময় আরও কিছু ব্যালট বাক্সে ঢুকানোর সময় পুলিশ এসে আনারস প্রতীকের কয়েকজন কর্মীকে ধাওয়া দেয়। খবর পেয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কেন্দ্রে এসে স্বাক্ষরবিহীন ২০০ ব্যালট পেপার জব্দ করেন।

কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এ টি এম আমিনুল ইসলাম বলেন, দুজন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সহযোগিতা বাইরে থেকে কিছু ব্যালট পেপার বাক্সে ফেলা হয়েছে।

বাক্সে অস্বাভাবিক ভোট পড়েছে। বুধবার দুপুরে ১২টার দিকে সোনারায় উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে
ছবি: প্রথম আলো

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম জাকির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এ টি এম আমিনুল ইসলাম, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান ও তরিকুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বাতিল বা স্থগিত হবে কি না, জানাতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন।

গাবতলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সোনারায় উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে অস্বাভাবিক ভোট পড়ার চিত্র দেখা যায়। বুধবার দুপুরে ১২টার দিকে
ছবি: সোয়েল রানা

আজ সকাল ৮টা থেকে বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও গাবতলীর উপজেলা পরিষদের ভোট গ্রহণ চলছে। তিনটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১১ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে শুধু সোনাতলা উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে যুবলীগ নেতা ফিদা হাসান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তিনটি উপজেলায় মোট ভোটকেন্দ্র ২২২টি। মোট ভোটার সংখ্যা ৬ লাখ ৪১ হাজার ৮৭। এর মধ্যে সারিয়াকান্দি উপজেলার মোট ভোটার ১ লাখ ৯৪ হাজার ২৯৮ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৭১। ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৩৬। সোনাতলা উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৬৬ হাজার ১৬১। ভোটকেন্দ্র ৫৩টি। এর মধ্যে ১৬টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। গাবতলী উপজেলার মোট ভোটার ২ লাখ ৮০ হাজার ৬২৮। ভোটকেন্দ্র ৯৮টি। সব কটি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ।

আরও পড়ুন