বাউফলে ছাত্রলীগ ও কিশোর গ্যাংয়ের ১২ সদস্য আটকের পর মুক্ত
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া বাজার এলাকা থেকে বুধবার রাতে ১২ জনকে আটক করে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে একজন ইউনিয়ন পর্যায়ের ছাত্রলীগ নেতা। বাকিরা এক কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় লোকজন। তবে আটকের ১৬ ঘণ্টা পর কোনো মামলা না করে মুচলেকা রেখে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এর আগে পুলিশ আটক ছাত্রলীগ নেতাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে চায়নিজ কুড়াল, রামদা, লোহার পাইপ, রড, লাঠিসোঁটাসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র জব্দ করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, একটি প্রভাবশালী মহল যেভাবে তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল, তাতে মামলা দেওয়ার সুযোগ ছিল না। এ কারণে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আটক ১২ জনের মধ্যে ৭ জনের বয়স ১৮ বা ১৮ বছরের বেশি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আটক মো. সিজান কাজী (২৪) কনকদিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক (একাংশের)। এ সময় তাঁর ছোট ভাই মো. সিয়াম কাজীকেও (১৯) আটক করা হয়। তাঁদের বাবা কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান মো. মিজান কাজী। বুধরাত রাত সাড়ে ১২টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বশির গাজী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রতীক কুমার কুন্ডু, বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শোনিত কুমার গায়েন ও পরিদর্শক আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ১২ জনকে আটকের পর আনসার ও পুলিশ সদস্যরা সিজানকে নিয়ে তাঁদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালান এবং দেশি অস্ত্রসহ লাঠিসোঁটা জব্দ করেন।
থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার কনকদিয়া বাজার এলাকায় মারামারি এবং পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ইউএনও পরিস্থিতি দেখার জন্য বুধবার রাত ১০টার দিকে ওই এলাকায় যান। এ সময় তাঁর নজরে পড়ে সিজানের দলবলের অস্বাভাবিক আচরণ। তখন ইউএনও থানার ওসিকে খবর দেন। পরে দেশি অস্ত্র উদ্ধারের পর রাত একটার দিকে আটক ১২ জনকে বাউফল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে পাঁচটা পর্যন্ত তাঁরা সবাই থানা হেফাজতে ছিলেন। পরে হঠাৎ সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
কনকদিয়া বাজার এলাকার আশপাশের লোকজন বলেন, ছাত্রলীগ নেতা সিজান একটি কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। ওই দলের সদস্যসংখ্যা ৪০ থেকে ৫০। তাঁদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। দেশি অস্ত্র পাওয়ার পরও তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এবার তাঁরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবেন।
বাউফল থানার ওসি শোনিত কুমার গায়েন বলেন, আটক অনেকের বয়স কম, এ কারণে সংশোধন হওয়ার সুযোগ দিয়ে তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনওর নির্দেশে তাদের আটক করা হয়েছিল। ইউএনওই মুচলেকা রেখে ছেড়ে দিয়েছেন। যাঁদের বয়স ১৮ ও ১৮ বছরের বেশি, তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে ওসি মন্তব্য করতে রাজি হননি।