রাজবাড়ীতে ডেঙ্গু জ্বরে যুব মহিলা লীগের নেত্রীর মৃত্যু

রাজবাড়ী জেলার মানচিত্র

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়ন যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক রুমানা আক্তার (২৬) মারা গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

রুমানা আক্তারের বাড়ি সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের কাজীবাধা গ্রামে, বাবার নাম বাবর আলী মোল্লা। বিবাহবিচ্ছেদের পর তিনি ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়ি থাকতেন। তাঁর ছেলে সোয়াদ ইসলাম (১২) স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে।

রুমানার ছোট ভাই রাসেল মোল্লা বলেন, ‘জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর গত বুধবার তাঁকে (রুমানা) রাজবাড়ীতে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যাই। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁর ডেঙ্গু ধরা পড়ে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকলে তাঁকে রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেখানেও তাঁর শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়। রাত প্রায় একটার দিকে ঢাকায় একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। রাতেই লাশ বাড়িতে আনা হয়েছে।’

রাজবাড়ী জেলা যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘রুমানা সংগঠনের নিবেদিতপ্রাণ কর্মী ছিলেন। সংগঠনের সব কর্মসূচিতে আন্তরিকভাবে তিনি অংশ নিতেন। তাঁর একমাত্র সন্তানটি এতিম হয়ে গেল। আমরা তাঁর সন্তানের দিকে খেয়াল রাখব।’

রাজবাড়ী সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রাজবাড়ীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ জন। তাঁদের মধ্যে রাজবাড়ী সদর উপজেলায় ২০ জন, পাংশা উপজেলায় ৮ জন, কালুখালী উপজেলায় ৪ জন এবং গোয়ালন্দ ও বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৫ জন করে রয়েছেন। জেলায় ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৪৯ জন। তাঁদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি আছে ১২৬ জন। জেলা সদর হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে ৩৪ জন, পাংশা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৩ জন, কালুখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৯ জন, বালিয়াকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৮ জন ও গোয়ালন্দ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন ১২ জন রোগী।

সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটন বলেন, প্রায় দুই মাস ধরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার রোগীর হার একই রকম। তবে মৃত্যুহার তুলনামূলক কম। আর রাজবাড়ীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কোনো রোগী মারা যাননি। হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তি সংখ্যা বেড়ে গেছে। এতে অন্য রোগীর চিকিৎসা দিতে সমস্যা হচ্ছে।

মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটন বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে মশকনিধনের ওপর জোর দিতে হবে। এ জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। মশার জন্মানোর স্থান ধ্বংস করতে হবে। ঘুমানোর সময় মশারি টাঙিয়ে ঘুমাতে হবে।