নারায়ণগঞ্জে ওবায়দুল কাদের ও শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের একটি বিপণিবিতানে আগুনে পুড়িয়ে টাইলস মিস্ত্রি সুহেল আহমদকে (২১) হত্যার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মামলাটি দায়ের হলেও আজ শনিবার বিষয়টি জানাজানি হয়।
নিহত সুহেল আহমদের বন্ধু আবদুল হামিদ চৌধুরী মামলাটি করেছেন। তিনি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার কাকুড়া এলাকার বাসিন্দা। নিহত সুহেল আহমেদের বাড়িও ওই এলাকায়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর আলম প্রথম আলোকে জানান, ওই ঘটনায় বাদী নিজেও আহত হন। এ কারণে তিনি বাদী হয়ে হত্যা মামলাটি করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত বছরের ১৩ জুলাই সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার কাকুড়া গ্রামের বাড়ি থেকে বাদী ও তাঁর বন্ধু সুহেল আহমদ টাইলসের কাজ করার জন্য নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের ইব্রাহিম শপিং কমপ্লেক্সে আসেন। তাঁরা ৯ তলার ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় টাইলসের কাজ করছিলেন। সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ১৮ জুলাই থেকে টাইলসের কাজ বন্ধ রেখে তাঁরা সেখানেই অবস্থান করেন। ওই আন্দোলন দমন করার জন্য ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে ২০ জুলাই বেলা তিনটার দিকে শামীম ওসমান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হুকুম দিলে আওয়ামী লীগের অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জন নেতা-কর্মী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। একপর্যায়ে তাঁরা ইব্রাহিম খলিল শপিং কমপ্লেক্সের দরজা-জানালা বন্ধ করে দাহ্য পদার্থ দিয়ে ভেতরে অবস্থানকারীদের হত্যার উদ্দেশ্যে আগুন ধরিয়ে দেন।
বাদী আরও উল্লেখ করেন, আগুনে চারদিকে অন্ধকার হয়ে গেলে বাঁচার জন্য তিনি ও তাঁর বন্ধু সুহেল ছোটাছুটি করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি দোতলা থেকে লাফ দিলে তাঁর ডান পায়ের গোড়ালি ভেঙে যায়। এ ছাড়া আগুনে বাঁ হাতের কনুইসহ দুই কানের অংশ সামান্য দগ্ধ হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে সাইনবোর্ড এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনার দুই দিন পর ২২ জুলাই সুহেল আহমদের আগুনে পোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়।