সংঘাতের পর আনন্দ মোহন কলেজ খুলেছে, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী কম

ময়মনসিংহে তিন দিন পর আনন্দ মোহন কলেজের শিক্ষাকার্যক্রম সচল হয়েছে। আজ সকালে ক্যাম্পাসে তুলনামূলক কম শিক্ষার্থীকে দেখা গেছে।ছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহ নগরে আনন্দ মোহন কলেজের ছাত্রাবাসে আসন নবায়ন নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনার তিন দিন পর প্রতিষ্ঠানটির একাডেমিক কার্যক্রম আবার চালু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কলেজটির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি তুলনামূলক কম দেখা গেছে।

আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কলেজের প্রধান ফটকের কাছে কলেজের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দেখা যায়। ওই সময় দুই-একজন করে শিক্ষার্থী কলেজে প্রবেশ করছিলেন। অন্যদিকে কলেজের বিভিন্ন বিভাগের সামনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের স্বল্প উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। আজ সকালে বিবদমান কোনো পক্ষকেই কলেজ এলাকায় দেখা যায়নি।

আরও পড়ুন

ব্যবস্থাপনা বিভাগের সমানের মাঠে বসে গল্প করছিলেন শফিকুল ইসলাম ও রিফাত মিয়া নামের দুই সহপাঠী। তাঁরা দুজনই বিভাগটির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁরা বলেন, ‘১৩ জানুয়ারি আমাদের নির্বাচনী পরীক্ষা ছিল। কিন্তু সংঘাতের কারণে কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় আমাদের পরীক্ষা পিছিয়েছে। আমরা কখনো সংঘাতময় পরিস্থিতি কামনা করি না। এতে আমাদের একাডেমিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে। ঘটে যাওয়া ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।’

তামান্না তাবাসসুম নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে কোনো ঝামেলা চাই না, নির্বিঘ্নে পাঠ কার্যক্রম চলুক।’

কলেজে ছাত্রদের তিনটি ছাত্রাবাস ঘুরে দেখা গেছে, সেখানেও কেউ নেই। কলাপসিবল গেটেও তালা ঝুলছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, সেদিন ছাত্রাবাসের আসন নবায়ন নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্টিয়ারিং কমিটির বসার কথা ছিল। কিন্তু একই সময়ে ছাত্রদলের সঙ্গে আলোচনায় বসে। তখন সাধারণ শিক্ষার্থীরা গেলে তাঁদের পরে আসতে বলেন শিক্ষকেরা। ওই সময় বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, এই কলেজে অনেক দূরের শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাসে অবস্থান পড়ালেখা করেন। ছাত্রাবাস বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী সমস্যায় পড়েছেন। তবে এসব সমস্যা মিটিয়ে ছাত্রাবাস খুলে দেওয়ার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

তিন দিন পর আজ একাডেমিক কার্যক্রম চালু হলেও কোনো ঝামেলা নেই বলে জানিয়েছেন আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষ আমান উল্লাহ। তিনি বলেন, তিন দিন পর আজ একাডেমিক কার্যক্রম চালু হলেও কোনো ঝামেলা নেই। বন্ধ থাকায় তিন দিন প্রশাসনিক কার্যক্রম ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা চলমান ছিল। আজ উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও সেটি ঠিক হয়ে যাবে।

গত রোববার কলেজের ছাত্রাবাসের আসন নবায়ন নিয়ে ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্যে হলে থাকা শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপর সেনাবাহিনী ও পুলিশ ক্যাম্পাসে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ শিক্ষার্থী আহত হন। পরে ছেলেদের তিনটি ছাত্রাবাস অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ ঘোষণা ও কলেজের তিন দিনের পাঠ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী গত সোমবার বিকেলে শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাস ছেড়ে চলে যান। এ ঘটনায় মঙ্গলবার কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

আরও পড়ুন