বরিশালে বিএনপির মানববন্ধন কর্মসূচি পুলিশের বাধায় পণ্ড

মানববন্ধন পালন করার জন্য বরিশাল বিএনপিপন্থী আইনজীবী ও দলীয় নেতা-কর্মীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গন থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাঁধা দেয়। রোববার সকালেছবি: প্রথম আলো

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বরিশালে বিএনপির মানববন্ধন কর্মসূচি পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে। বিএনপি গুমের শিকার ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে আজ রোববার সারা দেশে মানববন্ধনের ডাক দেয়। এ উপলক্ষে সকাল থেকেই বিপুলসংখ্যক পুলিশ নগরের সদর রোড, কাকলি মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নেয়।

জেলা, মহানগর ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্যরা কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা ১১টার দিকে সদর রোডের অশ্বিনীকুমার হল চত্বরের সামনে জড়ো হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য গোলাম মো. চোধূরী এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি মেজবাহ উদ্দীন ফরহাদসহ নেতারা মানববন্ধন করতে চাইলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ সময় বাধা উপেক্ষা করে কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করলে পুলিশের ধাওয়ায় নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। এরপর নেতা-কর্মীরা পুনরায় মিছিল বের করলে পুলিশ মিছিলকারীদের ধাওয়া দেয়।

পরে বরিশাল জেলা জজ আদালত চত্বরেও আরেকটি মানববন্ধন করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবী ও দলীয় নেতা-কর্মীরা। এ সময় বিএনপি নেতারা বলেন, তাঁরা মানববন্ধন করবেন বলে পুলিশকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিএনপিকে দমনের জন্য নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা–হামলা করা হচ্ছে। এভাবে বিএনপিকে দমানো যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতারা অভিযোগ করেন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্যরা মিছিল নিয়ে সদর রোডে আসার সময় পুলিশ তাঁদের ব্যানার কেড়ে নিয়েছে।

একই সময় বরিশাল উত্তর জেলা ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা সদর রোডে মিছিল করে দলীয় কার্যালয়ে আসার চেষ্টা করলে পুলিশ তাতেও বাধা দেয়। পরে নেতা-কর্মীরা নগরের সদর রোডের বিবিপুকুরপাড় এলাকায় সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আবুল কালাম শাহীন, জেলা আইনজীবী ফোরামের সভাপতি মহসিন মন্টু, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির নেতা কর্মীরা সড়কের পাশে অবস্থান নিলে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। বরিশাল নগরের গির্জা মহল্লায়
ছবি: প্রথম আলো

জেলা বিএনপির সদস্য সৈয়দ রফিকুল ইসলাম বলেন, এই কর্মসূচি ছিল মানুষের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বেঁচে থাকার কর্মসূচি। কিন্তু সেই কর্মসূচিও পুলিশ হামলা চালিয়ে পণ্ড করে দিয়েছে। গুম–খুন করে এই অত্যাচারী সরকার টিকতে পারবে না। অচিরেই এই ‘জালিম সরকারের’ পতন হবে।

অন্যদিকে জেলা মহিলা দল নগরের সদর রোডে মানববন্ধন করতে এলে তাদেরও সরিয়ে দেয় পুলিশ।

পুলিশি বাধায় কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর বিএনপি নেতা মেজবাহ উদ্দীন বলেন, সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে কতটা ভীত যে মানববন্ধনের মতো সামান্য শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিও তারা পণ্ড করে দিচ্ছে। সরকারের পেটোয়া পুলিশ বাহিনী তাঁদের এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়েও রাজপথে দাঁড়াতে দেয়নি। সরকার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মানুষের অন্যায়ের প্রতিবাদ করার স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র কেড়ে নিয়ে আজ দেশকে একটি ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। পদে পদে তাঁরা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।