কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগ-বিএনপির পাল্টাপাল্টি হামলা, আহত ৫

কোম্পানীগঞ্জে হামলায় আহত উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মাহমুদুর রহমানকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে বসুরহাটে
ছবি: প্রথম আলো

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাটে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কোম্পানীগঞ্জ থানার সামনের সড়ক ও আশপাশের এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

হামলায় উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মাহমুদুর রহমান ওরফে রিপনসহ (৫৩) উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত মাহমুদুর রহমানকে মাইজদীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে, বসুরহাট পৌর যুবদলের আহ্বায়ক ওবায়েদ উল্যাহ ওরফে রাফেলকে (৪২) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর হোসেনকে (৩৫) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

পুলিশ, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজ গেট এলাকায় পূর্ববিরোধের জেরে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আলম সিকদারের সমর্থকদের সঙ্গে সদস্যসচিব মাহমুদুর রহমানের সমর্থকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কোম্পানীগঞ্জ থানার সামনে মাহমুদুর ও তাঁর দুই অনুসারীর ওপর হামলা করেন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের একদল কর্মী। ঘটনার পর হামলাকারীরা হাসপাতাল সড়কে গিয়ে পৌর যুবদলের আহ্বায়ক ওবায়েদ উল্যাহর ওপর হামলা করে। এ সময় পাল্টা হামলায় আহত হন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, এ ঘটনার পর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বসুরহাট এলাকায় কয়েক দফা মহড়া দেন। এ নিয়ে কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হলেও পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আলম সিকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের মধ্যে ভুল–বোঝাবুঝি থাকতেই পারে। সেটা নিজস্ব বিষয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের কর্মীরা বিনা উসকানিতে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। এতে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মাহমুদুর রহমানসহ চারজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।’

তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। তিনি বলেন, ‘বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে তারা নিজেরা মারামারি করেছে। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা আলমগীরকে হাসপাতাল সড়কে পেয়ে তাঁর ওপর হামলা করা হয়। এ ঘটনার পর বিএনপির কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আমরা এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাদেকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত তারুণ্যের সমাবেশে বিরোধের জেরে বিএনপির দুই পক্ষ আজ বিকেলে মারামারি করেছে। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা আলমগীরের ওপর হামলা করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান কোম্পানীগঞ্জে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তাঁরা অবিলম্বে হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।