ভ্রাম্যমাণ আদালতে দ্বিতীয় দফায় শাস্তির মুখোমুখি কর্মীকে নিয়ে গেলেন চেয়ারম্যান প্রার্থী
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আচরণবিধি ভেঙে খাবার বিতরণের অভিযোগে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর আবারও একই স্থানে সভার আয়োজন করায় দ্বিতীয় দফায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে হাজির করা হয় ওই কর্মীকে। এর মধ্যেই চেয়ারম্যান প্রার্থী জামিল হাসান (দুর্জয়) মিছিল নিয়ে এসে ওই কর্মীকে নিয়ে যান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নগরহাওলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অর্থদণ্ড পাওয়া ওই কর্মীর নাম মো. হারুন অর রশিদ। তিনি একই গ্রামের বাসিন্দা। শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাইখা সুলতানা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। সঙ্গে ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোভন রাংসা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, চেয়ারম্যান প্রার্থী জামিল হাসানের পক্ষে নগরহাওলা গ্রামে একটি সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে বিধি ভেঙে বিপুল পরিমাণ খাবার বিতরণের জন্য রান্না করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাইখা সুলতানা। তিনি সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙার দায়ে হারুন অর রশিদকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। একই সঙ্গে খাবারগুলো জব্দ করে স্থানীয় এতিমখানায় বিতরণ করেন। সভাস্থলের প্যান্ডেলগুলো দ্রুত সরিয়ে নিয়ে সেখানে সভা না করার নির্দেশ দেন আদালত।
আইনি প্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর একই স্থানে আবারও সভা শুরু হয়। খবর পেয়ে পুনরায় ইউএনও ও উপজেলা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শোভন রাংসাকে নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাইখা সুলতানা। এ সময় হারুন অর রশিদকে আবারও আইনের আওতায় আনতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে আনা হয়। তখন চেয়ারম্যান প্রার্থী জামিল হাসান এসে হারুন অর রশিদসহ সব নেতা–কর্মীদের নিয়ে মিছিল করতে করতে চলে যান।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাইখা সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, জরিমানা করে সতর্ক করার পরও দ্বিতীয় দফায় সেখানে সভা চালানো হচ্ছিল। খবর পেয়ে আগেই জরিমানা করা একই ব্যক্তিকে আবারও জরিমানার আওতায় আনার কাজ চলছিল। এ অবস্থায় প্রার্থী এসে সবাইকে নিয়ে চলে যান। ঘটনাটি নির্বাচন কমিশনে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী জামিল হাসানের ঘনিষ্ঠ শ্রীপুর উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে ভ্রাম্যমাণ আদালত এসে পথসভার জন্য আমাদের দুই ঘণ্টা সময় দেন। ওই সময়ের মধ্যেই পথসভা শেষ করে আমরা চলে আসি। এখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে অসহযোগিতা বা অসৌজন্যমূলক আচরণ কেউ করেনি।’
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইউএনও শোভন রাংসা বলেন, ‘আমি গিয়ে দেখি, যিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী আছেন, তিনি সবাইকে নিয়ে মিছিল করতে করতে চলে যাচ্ছেন। তার আগে আচরণবিধি ভাঙায় সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে।’
ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী জামিল হাসান গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলীর বড় ভাই। তিনি গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন।