আদালতে যাওয়ার পথে আসামিদের মারধরে মামলার সাক্ষী নিহত

মারধর
প্রতীকী ছবি

বগুড়ার ধুনটে মারধরের অভিযোগে করা এক মামলার সাক্ষ্য দিতে আদালতে যাওয়ার সময় আসামিদের হামলায় এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার সকাল আটটার দিকে ধুনট উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের কোদলাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম আবদুল খালেক (৬২)। তিনি কোদলাপাড়া গ্রামের মৃত আজাহার আলীর ছেলে।

নিহত ব্যক্তির পরিবারের লোকজন বলেন, উপজেলার কোদলাপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন মোজাম্মেল হক। প্রায় এক মাস আগে ওই মসজিদের উন্নয়নে মুসল্লিদের বাড়ি থেকে এক মণ চাল উত্তোলন করা হয়। মসজিদের কোষাধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক ওই চাল বাকিতে বিক্রি করেন আবদুল খালেকের ছোট ভাই আবদুস ছাত্তারের কাছে। কিন্তু চালের টাকা পরিশোধ করতে টালবাহানা করতে থাকেন আবদুস ছাত্তার। এতে ক্ষুব্ধ হন মোজাম্মেল হক।

আবদুল খালেক (৬২)
ছবি : সংগৃহীত

একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে ৩ নভেম্বর মসজিদ চত্বরে আবদুস ছাত্তারকে মারধর করেন মোজাম্মেল হক ও তাঁর লোকজন। এ ঘটনায় আবদুস ছাত্তার বাদী হয়ে ৬ নভেম্বর মোজাম্মেল হক, তাঁর ছেলে ফজলুল হকসহ ৭ জনকে আসামি করে বগুড়া আদালতে একটি মামলা করেন। ওই মামলার সাক্ষী ছিলেন আবদুল খালেক। মামলার আসামিদের ও বাদীর বাড়ি একই গ্রামে।

আজ মঙ্গলবার ওই মামলার আসামিদের বগুড়া আদালতে সশরীর হাজিরা দেওয়ার দিন ধার্য ছিল। তাই আবদুস ছাত্তার ও তাঁর ভাই আবদুল খালেক সকালের দিকে আদালতের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। বাড়ির সামনে রাস্তায় পৌঁছালে মামলার এক নম্বর আসামি ফজলুল হকসহ অন্যরা আবদুস ছাত্তার ও তাঁর ভাই খালেকের ওপর হামলা চালান। এতে আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আবদুল খালেক। পরে তাঁকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক আবদুল খালেককে মৃত ঘোষণা করেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, কোদলাপাড়া গ্রামের একটি রাস্তার পূর্ব পাশে আসামিদের বাড়ি। পশ্চিম পাশে বাদীর বাড়ি। মাঝখানে রাস্তার ওপর বাবু নামের এক ব্যক্তির মুদিদোকান রয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলেন, আদালতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হলে ওই দোকানের কাছে বাদী ও আসামিদের দেখা হয়ে যায়। একপর্যায়ে ওই মামলা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। তখন অপর পক্ষের মারধরে খালেক আহত হন।

ঘটনার পর জড়িত ব্যক্তিরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। ফলে তাঁদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেছেন তাঁরা। আবদুল খালেকের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি ও জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।