সড়কে অবৈধ অটোরিকশা, বেশি ভাড়া আদায় 

একেকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চালকের পাশে দুজন ও পেছনে তিনজনসহ মোট পাঁচজন যাত্রী বহন করা হয়।

পাবনার বেড়ায় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। গতকাল বেড়া বাসস্ট্যান্ডে
ছবি: প্রথম আলো

ঈদের পর চার দিন পেরিয়ে গেছে। এখনো অনেক যাত্রী পাবনার বেড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে কাজীরহাট নৌঘাট হয়ে ঢাকা যাচ্ছেন। কাজীরহাটে যেতে বেশির ভাগ যাত্রী সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠছেন। মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ হলেও যাত্রীর চাপ বেড়ে যাওয়ার সুযোগে এই যানের চালকেরা দেড় থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছেন।

একেকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চালকের পাশে দুজন ও পেছনে তিনজনসহ মোট পাঁচজন যাত্রী বহন করা হয়। বেড়া থেকে কাজীরহাট পর্যন্ত একেকজন যাত্রীর ভাড়া ৬০ টাকা। কিন্তু ঈদের ভিড় শুরু হওয়ার পর নেওয়া হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা করে। আবার বেড়া থেকে পাবনা শহর পর্যন্ত বাসের ভাড়া একেকজনের ৮০ টাকা হলেও ঈদের পরদিন থেকে ১০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।

বেড়া বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, কাজীরহাট যাওয়ার অপেক্ষায় অসংখ্য অটোরিকশা সারি (লাইন) ধরে দাঁড়িয়ে আছে। সিরিয়াল অনুযায়ী সামনে থাকা অটোরিকশাগুলো অল্প সময়ের মধ্যেই বোঝাই হয়ে কাজীরহাটের উদ্দেশে ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক ধরে ছুটে যাচ্ছে। যাত্রীপ্রতি আদায় করা হচ্ছে ১০০ টাকা।

অটোরিকশাচালক মো. মওলা, হেদায়েত হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কাজীরহাট থেকে ফেরার পথে প্রায় খালি আসতে হচ্ছে। এ ছাড়া সারা বছর তেমন আয় হয় না। তাই ঈদের সময়ে কিছুটা বেশি ভাড়া নিয়ে থাকেন।

অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে বিকল্প না থাকায় তাঁরা বাধ্য হচ্ছেন বেশি ভাড়ায় গন্তব্যে যেতে। অটোরিকশার পাশাপাশি বাস ও ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাসেও বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।

তবে বেড়া থেকে পাবনাগামী একাধিক বাসের চালক বলেন, বেড়া থেকে পাবনা পর্যন্ত নির্ধারিত ভাড়া ১৩৪ টাকা। অথচ এখন মাত্র ১০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। অবশ্য ঈদের আগে যাত্রীদের সুবিধার্থে আরও কমিয়ে মাত্র ৮০ টাকা নেওয়া হতো। ঈদ উপলক্ষে এখন ১০০ টাকা করে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে ঈদ উপলক্ষে বিয়েসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান বেড়ে যাওয়ায় ভাড়াচালিত মাইক্রোবাসের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাইক্রোবাসের মালিক ও চালকেরা দেড় থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছেন। ঈদের আগে বেড়া থেকে পাবনা পর্যন্ত মাইক্রোবাসের ভাড়া ছিল আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। ঈদের পর থেকে সেই ভাড়া সাড়ে চার থেকে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। ঢাকা, রাজশাহীসহ অন্যান্য স্থানের যাতায়াতের ভাড়াও একই হারে বেড়েছে।

 বেড়া উপজেলা মাইক্রোবাস শ্রমিক সমিতির সভাপতি আবদুল হাই বলেন, ‘পবিত্র রমজান মাসে বেশির ভাগ গাড়িই বসে ছিল। তখন সবারই লোকসান হয়েছে। লোকসান কিছুটা পুষিয়ে নিতে ভাড়া অল্প বাড়ানো হয়েছে। তবে যাঁরা গাড়ি ভাড়া করছেন, তাঁরা খুশি মনেই বিষয়টি মেনে নিচ্ছেন।’

 মাধপুর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নবীর হোসেন বলেন, ‘এমনিতেই মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চলাচল নিষিদ্ধ। মহাসড়কে এগুলোর চলাচল বন্ধে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এর ওপর অটোরিকশাসহ অন্যান্য যানবাহন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 বেড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবুর আলী বলেন, ‘কেউ যাতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে না পারেন, সে ব্যাপারে আমরা নজর রাখছি।’