নতুন বাংলাদেশে ন্যায্যতার ভিত্তিতে সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে: গোলাম পরওয়ার

খুলনার ডুমুরিয়ায় নির্বাচনী সভায় বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। শনিবার সকালে উপজেলার খলশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠেছবি: প্রথম আলো

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘ইসলামি ও দেশপ্রেমিক সমমনা সব দলের সমন্বয়ে একটি ঐক্যের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ে জুলাই সনদের ভিত্তিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। নতুন বাংলাদেশে আগের মতো সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম, অন্যায়, অত্যাচার, জুলুম, নির্যাতন, গুম, খুন-খারাবি থাকবে না। দেশ হবে সাম্যের, ঐক্যের, ন্যায়ের ও ইনসাফের। নতুন বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সবাই ন্যায্যতার ভিত্তিতে রাষ্ট্রের সমান অধিকার ভোগ করবে।’

আজ শনিবার সকালে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার খলশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত নির্বাচনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মিয়া গোলাম পরওয়ার এসব কথা বলেন।

গোলাম পরওয়ার বলেন, বিগত সরকার দেশের আলেম-ওলামাদের ওপর অকথ্য জুলুম-নির্যাতন করেছিল। জামায়াত, হেফাজত, চরমোনাইয়ের হাজার হাজার আলেম-ওলামাকে বিনা অপরাধে বছরের পর বছর জেলে রেখে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেছে। কারণ একটাই—তাঁবেদারি সরকারব্যবস্থা ও ভারতের আধিপত্যের বিরুদ্ধে কথা বলা। এখন সময় এসেছে আলেম-ওলামাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ থেকে জুলুম-নির্যাতনের অবসান ঘটানো। তাই আগামী নির্বাচনে আলেম-ওলামা, দেশপ্রেমিক জনতা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাঁবেদারি ও আধিপত্যবাদী শক্তির চির অবসান ঘটাতে হবে।

সংসদ সদস্য থাকাকালীন নিজের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘২০০১ সালে আপনারা ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেছিলেন। আমি আপনাদের সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাসমুক্ত ডুমুরিয়া গড়েছিলাম। সড়ক কার্পেটিংসহ মসজিদ, মন্দির, ঈদগাহ, শ্মশান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, ডুমুরিয়া মহিলা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা, নতুন বিদ্যুতায়নের উন্নয়ন করেছিলাম। আগামী সংসদ নির্বাচনে আবার যদি আপনারা আমাকে দায়িত্ব দেন, তাহলে অতীতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এ অঞ্চলের বাকি কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করব ইনশা আল্লাহ।’

জামায়াতের এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘গত ১৯ জুলাই ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত জাতীয় সমাবেশে আমাদের দলের প্রধান শফিকুর রহমান তাঁর বক্তব্যে দুর্নীতির ব্যাপারে জিহাদ ঘোষণা করেছিলেন। ২০০১ সালে আমাদের ১৬ জন এমপিসহ দুজন মন্ত্রী ছিল জোট সরকারে। তৎকালীন এক-এগারোর সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার চিরুনি দিয়ে চেষ্টা করেছিল জামায়াত নেতাদের দুর্নীতি খুঁজে বের করতে। আলহামদুলিল্লাহ আমাদের একজন এমপি-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে একটি টাকারও দুর্নীতি খুঁজে পায়নি। তাই আল্লাহর রহমতে ও আপনাদের ভালোবাসায় জামায়াতে ইসলামী যদি সরকার গঠন করে তাহলে এ দেশ থেকে দুর্নীতি-অনিয়ম দূর করাই হবে আমাদের প্রধান কাজ।’

সদর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির আবদুল গণি খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলার আমির এমরান হুসাইন, সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম ও অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য আবু ইউসুফ মোল্লা, জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইউসুফ ফকির। মশিউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ডুমুরিয়া উপজেলা আমির মোক্তার হোসেন, নায়েবে আমির গাজী সাইফুল্লাহ ও মাওলানা হাবিবুর রহমান, জেলা ছাত্রশিবিরের নেতা মো. বোরহান উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ডুমুরিয়া উপজেলার সহসভাপতি মুফতি আব্দুস সালাম, হিন্দু কমিটির সেক্রেটারি দেবপ্রসাদ মণ্ডল প্রমুখ বক্তৃতা করেন।