জনপ্রতিনিধি থাকার সময় কোটি টাকার মালিক হন টেকনাফের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান

জাফর আহমদ

কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের মামলায় কক্সবাজারের টেকনাফের সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আহমদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালতে এটি জমা দেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন।

এতে বলা হয়, জাফর আহমদ জনপ্রতিনিধি থাকার সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৪ কোটি ৯০ লাখ ৬৯ হাজার টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি। ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের মে পর্যন্ত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রহমান বদির অনুসারী হিসেবে পরিচিত জাফর আহমদ। তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবারও প্রার্থী হয়েছেন তিনি। ২৯ মে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

দুদক জানায়, ২০১৭ সালের ৫ জুলাই জাফর আহমদকে সম্পদ বিবরণী জমা দিতে নোটিশ দেয় দুদক। ওই বছরের ৩০ জুলাই তিনি সম্পদ বিবরণী জমা দেন দুদক কার্যালয়ে। পরে দুদক যাচাই-বাছাই করে প্রাথমিকভাবে জাফরের ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৬০ হাজার টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পায়। এই ঘটনায় ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল দুদক চট্টগ্রামের তৎকালীন উপসহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে নগরের ডবলমুরিং থানায় মামলা করেন। এতে জাফর আহমদকে আসামি করা হয়। এই মামলায় ২০২১ সালের জানুয়ারিতে চট্টগ্রাম আদালতে আত্মসমর্পণ করে কারাগারে যান তিনি। পরে জামিনে মুক্তি পান। পরে মামলার তদন্তে বেরিয়ে আসে আরও অবৈধ সম্পদের তথ্য।

তদন্ত শেষে গতকাল দুদকের চট্টগ্রাম আদালতে জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, জাফর আহমদ জনপ্রতিনিধির ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৪ কোটি ৯০ লাখ ৬৯ হাজার টাকার অবৈধ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন। তাঁর ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৫৩ হাজার টাকার মোট সম্পদের তথ্য পায় দুদক। এর মধ্যে পারিবারিক ও অন্যান্য খরচ বাবদ ব্যয় করেন ৫৪ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। দুদক মোট গ্রহণযোগ্য আয় পায় ২ কোটি ৪৭ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া যায় ৪ কোটি ৯০ লাখ ৬৯ হাজার টাকার। এ সম্পদগুলোর মধ্যে টেকনাফে জমি ও ব্যাংক হিসাবে টাকা রয়েছে জাফরের।

অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল জাফর আহমদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। তাঁর ভাগনে পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি জানান, জাফর আহমদ জনসভায় ব্যস্ত রয়েছেন।

দুদকের আইনজীবী কাজী সানোয়ার আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্রটি গ্রহণের শুনানির জন্য আদালতের পরবর্তী তারিখে শুনানি হবে। তারিখ এখনো জানা যায়নি।