আওয়ামী লীগ প্রার্থীর হয়ে নির্বাচনী প্রচারে সরকারি কর্মকর্তা স্ত্রী

বিধি ভেঙে নৌকার প্রার্থীর মিছিলে অংশ নেন আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সায়মা আফরোজ
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি অনুযায়ী নির্বাচনী প্রচারণায় সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ না থাকলেও তা-ই করছেন নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম ওরফে বাবুর স্ত্রী। সবশেষ বৃহস্পতিবার নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন তিনি।

নজরুল ইসলামের স্ত্রী চিকিৎসক সায়মা আফরোজ আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও)। এবার নিয়ে আসনটিতে টানা চতুর্থবারের মতো দলীয় মনোনয়নে নির্বাচন করছেন নজরুল ইসলাম। এই আসনে জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আলমগীর সিকদার ওরফে লোটন। তাঁর অভিযোগ, প্রতীক বরাদ্দের পর প্রতিদিনই সায়মা আফরোজ তাঁর স্বামীর হয়ে প্রচারণায় নামছেন। এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দেবেন বলেও জানান।

আজ শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে সায়মা আফরোজকে নৌকার মিছিল করতে দেখা গেছে। আড়াইহাজার আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়ে মিছিল ও গণসংযোগ করেন সায়মা আফরোজ। ইউনিয়নের বাজবি এলাকা থেকে কালীবাড়ি পর্যন্ত স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রচারণা চালান তিনি। এ সময় নৌকার পক্ষে ভোট চান সায়মা। দুপ্তারা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহিদা মোশারফ, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আহমেদুল কবির, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনসহ আওয়ামী লীগের লোকজন এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন।

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯-এর ২৫(৩) ধারায় বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারী বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অথবা অন্যত্র কোনো আইন সভার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে অথবা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে বা অন্য কোনোভাবে হস্তক্ষেপ করতে বা প্রভাব খাটাতে পারবেন না। প্রচারণায় অংশ না নিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালাতেও নির্দেশনা আছে।

তবে সায়মা আফরোজ জানান, তিনি সরকারি কর্মকর্তা হলেও একই সঙ্গে নজরুল ইসলামের স্ত্রী। প্রার্থীর স্ত্রী হিসেবে প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। এবং এই কাজে তিনি তাঁর সরকারি পরিচয় কিংবা সরকার থেকে প্রাপ্ত কোনো সুবিধা ব্যবহার করছেন না বলে দাবি তাঁর। বিষয়টি নজরে আনা হলে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’