স্বামীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন স্ত্রী

জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় স্বামীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে আত্মসমপর্ণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন স্ত্রী। আজ সোমবার ভোরে উপজেলার পুটিয়াখালী এলাকা থেকে ওই গৃহবধূ মুঠোফোনে কল করে স্বামীকে হত্যার বিষয়টি জানান।

নিহত ব্যক্তির নাম রবিউল আউয়াল তালুকদার (৩৯)। তিনি একই এলাকার আবদুর রহমান তালুকদারের ছেলে। রবিউল পেশায় অটোরিকশাচালক ছিলেন। অভিযুক্ত রবিউলের স্ত্রী সাফিয়া বেগমকে (৩২) পুলিশ আটক করে থানা হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

আজ দুপুরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর গণমাধ্যম ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আনোয়ার সাত্তার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৯৯৯-এ কনস্টেবল ইকরামুল কলটি ধরেন। ইকরামুল তাৎক্ষণিকভাবে রাজাপুর থানায় বিষয়টি জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেন। সংবাদ পেয়ে রাজাপুর থানা-পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে কলারকে (গৃহবধূকে) থানায় নিয়ে আসেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, দুই সন্তানের জননী সাফিয়া খাতুন তাঁর অটোচালক স্বামী রবিউল আওয়াল তালুকদারকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগে থাকত। সাফিয়া সন্দেহ করতেন, তাঁর স্বামী আরেকটি বিয়ে করেছেন। যেকোনো সময় তাঁকে হত্যা করতে পারেন। সেই সন্দেহ ও আশঙ্কা থেকে তিনিই স্বামীকে হত্যা করেছেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।

নিহত রবিউলের বোন ফরিদা বেগম অভিযোগ করেন, ‘রোববার রাতে রবিউলকে গলা কেটে হত্যা করেন সাফিয়া। এ সময় তাদের দুই ছেলে পাশের রুমে ঘুমিয়ে ছিল। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানানো হয়। পুলিশ দিবাগত রাত তিনটার দিকে এসে রবিউলের লাশ উদ্ধার করে এবং সাফিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমরা সাফিয়ার বিরুদ্ধে হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রেম করে ২০০৫ সালে ঢাকায় বিয়ে করেন রবিউল ও সাফিয়া। সে সময় দুজনই পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। বছর পাঁচেক আগে তাঁরা এলাকায় ফিরে আসেন। তাঁদের সংসারে নবম ও ষষ্ঠ শ্রেণিপড়ুয়া দুই ছেলে আছে। সম্প্রতি দুজনের পারিবারিক কলহ চলছিল। আড়াই মাস আগে আরও একটি বিয়ে করেন রবিউল। এ নিয়ে দাম্পত্য কলহ আরও বেড়ে যায়। এর জেরে গতকাল রোববার রাত দেড়টার দিকে ঘুমন্ত রবিউলের হাত-পা বেঁধে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন সাফিয়া।

রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলক চন্দ্র রায় বলেন, সাফিয়া তাঁর স্বামীকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর স্বামী আরও একটি বিয়ে করেছেন, এমন সন্দেহের ভিত্তিতে স্বামীকে তিনি হত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন