সাত হাঁড়ি গুপ্তধনের প্রলোভন দেখিয়ে গৃহবধূর প্রায় ৪ লাখ টাকা লুট, ‘জিনের বাদশাহ’ গ্রেপ্তার

পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার সাদ্দাম আলী। বৃহস্পতিবার গাইবান্ধার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

গভীর রাতে হঠাৎ বেজে উঠল মুঠোফোন। ধরতেই অজপাড়াগাঁয়ের গৃহবধূর কানে ভেসে এল, ‘মা, আমি জিনের বাদশাহ। ভয় করো না। আমার কাছে সাত হাঁড়ি গুপ্তধন আছে। এগুলো পাহারা দিচ্ছে সাতটি সাপ। সেই সাপকে দুধ খাইয়ে সন্তুষ্ট করতে হবে। দুধ আনতে হবে মক্কা থেকে। তবেই সাত হাঁড়ি গুপ্তধন তুমি পাবে।’

এসব শুনে কেউ বিশ্বাস না করলেও সহজ-সরল গৃহবধূকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বিকাশে হাতিয়ে নেওয়া হয় ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এখানেই শেষ নয়। টাকা নেওয়ার পর মাটির নিচ থেকে স্বর্ণের পুতুল উদ্ধার করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এ জন্য নেওয়া হয় দুই ভরি স্বর্ণালংকার। পরে আকলিমাকে একটি পুতুল হাতে ধরিয়ে দেয় কথিত জিনের বাদশাহ। সেটিও সিমেন্ট ও পিতলের তৈরি। সাদ্দাম আলী (২৯) নামের সেই প্রতারককে প্রযুক্তির সহায়তায় গতকাল বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে ব্রিফিং করে এসব তথ্য তুলে ধরেন গাইবান্ধার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. কামাল হোসেন। প্রতারণার শিকার ওই গৃহবধূর নাম আকলিমা বেগম (৪০)। তিনি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ মরুয়াদহ গ্রামের বানিজ মিয়ার স্ত্রী।

ব্রিফিংয়ে বলা হয়, জিনের বাদশা পরিচয় দিয়ে গৃহবধূ আকলিমাকে গুপ্তধন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন সাদ্দাম। এরপর আকলিমা তাঁকে বিভিন্ন সময় বিকাশের মাধ্যমে ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেন। একপর্যায়ে স্বর্ণের জিনিসপত্র প্রতারককে দিয়ে দেন। পরিবারের লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেন বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে আকলিমা বেগমের টাকা পাঠানো বিকাশ নম্বরের সূত্র ধরে প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য সাদ্দাম আলীকে শনাক্ত করা হয়। তারপর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের গোবিন্দপুর নলডাঙ্গাচর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বাড়ি একই উপজেলার বগুলাগাড়ি গ্রামে। এ ঘটনায় সাদ্দামের বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার সাদ্দামকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।