আওয়ামী লীগের লিফলেট বিলির ‘মাস্টারমাইন্ড’ সন্দেহে জেলা পরিষদের সাবেক সদস্যকে পেটাল যুবদল
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘিরে রাতের বেলায় লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলার নরদাশ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি আবু বাক্কারসহ (৩৬) পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে তিন শতাধিক প্রচারপত্র জব্দ করা হয়েছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির প্রতিবাদে উপজেলা সদরে জাতীয়তাবাদী যুবদল বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। সমাবেশ শেষে জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আবু জাফরকে (৫১) পিটিয়ে নাক ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাতের বেলায় আওয়ামী লীগের ‘নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড’ ঠেকানোর জন্য বিএনপির উদ্যোগে টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার রাতে বাগমারার বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের লিফলেট ফেলে যাওয়া হয়। ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সভাপতি দেশরত্ন শেখ হাসিনার আহ্বান, হটাও ইউনুস, বাঁচাও দেশ’ শিরোনামের এক পাতার লিফলেট উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও বাড়ির দরজায় ফেলে রাখা হয়। সকালে লিফলেটগুলো লোকজনের নজরে আসে। এগুলো কারা ফেলেছেন, তা কেউ দেখেননি।
আওয়ামী লীগের প্রচারপত্র বিলির প্রতিবাদে ও তাদের শাস্তির দাবিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করে যুবদল। ভবানীগঞ্জ গোডাউন মোড় থেকে মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণের পর জিরো পয়েন্টে পথসভায় মিলিত হয়। সভায় বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের উপজেলা শাখার সভাপতি আবদুল মালেক, যুবদল নেতা জহুরুল ইসলাম, শাহাদাৎ হোসেন, মহব্বত আলী, বিএনপি নেতা আহসান হাবিব, মোজাম্মেল হক প্রমুখ। সভা থেকে প্রচারপত্র বিলিকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।
আজ বেলা দেড়টার দিকে ভবানীগঞ্জ পেট্রলপাম্পের সামনে রাজশাহী জেলা পরিষদের সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতা আবু জাফরকে পেয়ে ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা মারধর করে নাক ফাটিয়ে দেন। পরে লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। তবে তিনি কোথায় চিকিৎসা নিচ্ছেন, তা জানা যায়নি। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে। তাঁর এক স্বজন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি আত্মগোপনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
যুবদল উপজেলা শাখার আহ্বায়ক আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, জাফর মাস্টার লিফলেট বিতরণের মাস্টারমাইন্ড। তিনি গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থী এবং বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাঁকে ধরেনি।
এদিকে আওয়ামী লীগের ‘নৈরাজ্য ও রাতের বেলায় সম্ভাব্য সন্ত্রাসী কার্যকলাপ’ প্রতিহতের জন্য রাত্রিকালীন টহলের ব্যবস্থা নিয়েছে স্থানীয় বিএনপি। উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কামাল হোসেনের উদ্যোগে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গতকাল রাতে উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় মোটরসাইকেল নিয়ে টহল দেওয়া হয়। কামাল হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করতে দেওয়া হবে না। দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশি তৎপরতার মধ্যেও লিফলেট বিতরণ করা হয়। পুলিশ লিফলেটসহ পাঁচজনকে আটক করেছে। তাঁদের আদালতে তোলা হবে। জেলা পরিষদের সাবেক সদস্যকে মারপিটের কথা শুনেছেন। তবে তাঁকে পুলিশে দেওয়া হয়নি।