সিলেটে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া মুখপোড়া হনুমানটি অন্তঃসত্ত্বা ছিল, অপরিণত বাচ্চার জন্ম

‌মুখপোড়া হনুমানটিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে চি‌কিৎসা দিচ্ছেন প্রাধিকারের কর্মীরা
ছ‌বি: প্রথম আলো

সিলেটে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রায় ৩৫ ফুট ওপর থেকে পড়ে যাওয়া একটি মুখপোড়া হনুমান উদ্ধার করেছিলেন ট্রাকচালক রিপন কুমার দেব (৩৩)। সেবা-শুশ্রূষার পর হনুমানটি সুস্থ হয়ে উঠেছিল। পরে গাছ থেকে পড়ে অপরিণত একটি মৃত বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পর অন্তঃসত্ত্বা হনুমানটি আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে।

গত সোমবার সকালে হনুমানটি উদ্ধারের পর গতকাল মঙ্গলবার সকালে সুস্থ হয়ে মুখপোড়া হনুমানের একটি দলের সঙ্গে সে গাছে উঠেছিল। বিকেলের দিকে হনুমানটি গাছ থেকে পড়ে যায়। এতে মুখপোড়া হনুমানটি অপরিণত বাচ্চার জন্ম দেয়। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়ে হনুমানটি।

সিলেটের পরিবেশবাদী সংগঠন ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সমন্বয়ক আশরাফুল কবিরকে বিষয়টি জানান রিপন কুমার দেব। খবর পেয়ে আশরাফুল কবির বিষয়টি সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘প্রাধিকার’ কর্মীদের জানান। গতকাল রাত ১০টার দিকে প্রাধিকারের কর্মীসহ আশরাফুল কবির হনুমানটিকে উদ্ধার করে সিলেট বিমানবন্দর-সংলগ্ন কাকুয়ারপাড় এলাকা থেকে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএমসি ভেটেরিনারি টিচিং হাসপাতালে মুখপোড়া হনুমানটিকে প্রাধিকারের কর্মীদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আজ অনেকটা সুস্থ হয়েছে হনুমানটি।

প্রাধিকারের সভাপতি মো. মাহাদী হাসান বলেন, মুখপোড়া হনুমানটি অন্তঃসত্ত্বা ছিল। প্রথমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিচে পড়ে গিয়ে আহত হওয়ার পর কিছুটা সুস্থ হয়ে গাছে উঠেছিল। এরপর দ্বিতীয় দফায় গাছ থেকে পড়ে সেটি আহত হয়। এতে হনুমানটির পেটে থাকা বাচ্চাটি নষ্ট হয়ে যায়। গাছ থেকে পড়ার পর হনুমানটি অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। খবর পেয়ে ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সমন্বয়ক আশরাফুল কবিরের সহযোগিতায় হনুমানটিকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

মাহাদী হাসান আরও বলেন, হাসপাতালে আনার পর হনুমানটির চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আজ সকালে হনুমানটিকে তার পছন্দের খাবার কদম ফুল, গাছের পাতা ও আমড়া খেতে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো মুখপোড়া হনুমানটি খেয়েছে। এখন সে অনেকটা সুস্থ। তিনি বলেন, মুখপোড়া হনুমানটিকে আরও কয়েক দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। পরে সেটিকে অবমুক্ত করা হবে।

এর আগে সোমবার সকালে কাকুয়ারপাড় এলাকার সড়কের পাশে বিদ্যুতের খুঁটির নিচ থেকে মুখপোড়া হনুমানটিকে উদ্ধার করেন রিপন কুমার দেব। পরে তিনি হনুমানটিকে সেবা দিয়ে সুস্থ করে তুলেছিলেন। এরপর সেটি গাছেও উঠেছিল। গাছে ওঠার পর হনুমানটি কোনোভাবে মাটিতে পড়ে যায়।