বান্দরবানে প্রায় দুই হাজার পরিবারের পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে বসবাস

পাহাড় কেটে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসতবাড়ি তৈরি করা হয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের ঝুঁকি নিয়েও এসব এলাকায় লোকজন বসবাস করছেন। গত সোমবার বান্দরবানের কালাঘাটা গোদার পাড় এলাকায়মংহাইসিং মারমা।

বান্দরবানের দুই পৌরসভাসহ সাত উপজেলায় প্রায় দুই হাজার পরিবারের সাড়ে ১০ হাজার মানুষ পাহাড়ধসের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। বর্ষার ভারী বৃষ্টি হলে ঝুঁকিপূর্ণ বসতঘর পাহাড়ধসে চাপা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জেলার ১০ হাজার বাসিন্দার মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ অতিমাত্রায় ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে লামা ও বান্দরবান পৌরসভায় অতিমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ লোকজনের সংখ্যা বেশি। গতকাল মঙ্গলবার পৌরসভা ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

পাহাড়ধসে ২০১৭ সালের জুন ও জুলাইয়ে বান্দরবান জেলায় ১৪ জনের মৃত্যুর পরে জেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের উদ্যোগে একটি জরিপ করা হয়। জরিপে দেখা যায়, জেলার সাতটি উপজেলা ও দুটি পৌরসভায় পাহাড়ধসের ঝুঁকি নিয়ে ১ হাজার ৪৪৪টি পরিবার বসবাস করছে। এর মধ্যে পৌরসভাসহ লামা উপজেলায় ৪৫০ পরিবার, নাইক্ষ্যংছড়িতে ৩২৩, পৌরসভাসহ বান্দরবান সদর উপজেলায় ২৩২ পরিবার, রোয়াংছড়িতের ৫৯, আলীকদমে ২১৩, রুমায় ৮৩ ও থানচিতে ১০৮টি পরিবার ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাস করে।

ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসকারী এসব পরিবার নিয়ে ২০১৭ সালের পর আর কোনো জরিপ হয়নি। ভারপ্রাপ্ত জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আসিফ রায়হান বলেছেন, পাহাড়ধসের ঝুঁকির সাম্প্রতিক কোনো হিসাব নেই। ধারণা করা যেতে পারে, ২০১৭ সালের পরে এই সংখ্যা আরও অনেক বেড়েছে। অবশ্য এবারে রিমালে ২১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হলেও কেউ আশ্রয় নিতে আসেননি। ১০টি পরিবারের খুবই কম বা আংশিক ক্ষতি হয়েছে, তাঁরাও আশ্রয়কেন্দ্রে আসেননি।

বান্দরবান পৌরসভার মেয়র সামসুল ইসলাম বলেছেন, পৌরসভার ভেতরে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের তালিকা করা হবে। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের তালিকা করতে বলা হয়েছে।

২০১৭ সালের জরিপের পর জেলা প্রশাসন থেকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন আকারে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ পুনর্বাসন না হওয়া পর্যন্ত ৫০টি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা জরুরি। প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে ২০০ পরিবার থাকা–খাওয়ার সুবিধা থাকবে। ৫০টি আশ্রয়কেন্দ্রের জন্য ২০ কোটি টাকা প্রয়োজন। কিন্তু জেলা প্রশাসনের প্রস্তাবে কোনো সাড়া মেলেনি বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।