পাঁচ দিন ধরে অন্ধকারে, বিদ্যুতের দাবিতে মানববন্ধন

লালমনিরহাট সদরের মোগলহাট ইউনিয়নে পাঁচ গ্রামের মানুষ বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবিতে রোববার সকালে মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছে
ছবি: প্রথম আলো

পাঁচ দিন ধরে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন লালমনিরহাট সদরের মোগলহাটের পাঁচ গ্রামের মানুষ। গত মঙ্গল ও শনিবার ঝড়ে পল্লী বিদ্যুতের বৈদ্যুতিক লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়ার দাবিতে আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত স্থানীয় মেঘারাম বাজারে মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী।

মানববন্ধনের সময় মোগলহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আবুল হোসেন কাজী, মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য শুকুর উদ্দিন, পল্লিচিকিৎসক ফরহাদ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। এ সময় সভাপতিত্ব করেন ইটাপোতা গ্রামের চালকলের মালিক শামসুল হক।

পাঁচ দিন ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় নানা ধরনের সমস্যা হওয়ার কথা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, গত মঙ্গলবার ঝড়ের পর থেকে মোগলহাটের ইটাপোতা, মেঘারাম, কুড়ুল, কর্ণপুর ও বুমকা গ্রামের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে এসব গ্রামের চালকল, মুরগির খামার, গরুর খামার, ইজিবাইকের ব্যাটারি চার্জ, মুঠোফোন চার্জসহ ফ্রিজগুলোয় বিদ্যুতের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। গত শুক্রবার বিদ্যুৎ না থাকায় অতিরিক্ত গরমে ইটাপোতা গ্রামের সাইদুল হকের একটি গাভী অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। একই গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মুরগির খামারের ৫০টি সোনালি ব্রয়লার মুরগি গরমে অসুস্থ হয়ে মারা গেছে।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কোনো কাজ বাড়তি টাকা না দিলে হয় না, নানা অজুহাতে টাকা নেওয়া হয়, তারপরও কাজে বিলম্ব ঘটে থাকে। এর কোনো প্রতিকার নেই বললেই চলে। আবার ঘন ঘন লোডশেডিং দেওয়া হয়।

মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. আফসার আলী বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় গত মঙ্গলবার থেকে এখন পর্যন্ত অত্র ইউনিয়ন পরিষদের সব ধরনের অনলাইন পরিষেবা বন্ধ রয়েছে।

মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘গত মঙ্গল ও  শনিবার দুই দিনের ঝড়ের কারণে পল্লী বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় এলাকার লোকজন বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকসেবা নিশ্চিতকরণের জন্য আমি নিজে তাঁদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছি। কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি, এ অবস্থায় এলাকার লোকজন রাস্তায় নেমে মানববন্ধন করতে বাধ্য হয়েছে।’

কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপমহাব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, ‘ঝড়ের কারণে বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন গাছের ডালপালা ভেঙে ও উপরে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন মেরামতের কাজ চলছে। এরপর বিদ্যুৎ সরবরাহ আবার দেওয়া হবে। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, কেউ যদি কারও নিকট থেকে কোনো রকম অনৈতিক সুবিধা নিয়ে থাকেন, সে বিষয়ে তথ্য দিলে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’