কাদাপানিতে একাকার, হাঁটাও দায়, ভোগান্তি 

সড়কটি দিয়ে রুকনাই, রুকনাই দক্ষিণপাড়া, খাসিমারা, নলকুড়ি, চাড়াইলদার, পুঠিয়াপাড়া ও নলছিয়া গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন।

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের পয়লা-রুকনাই সড়ক এমন বেহাল। গতকাল সকালে রুকনাই গ্রামে
প্রথম আলো

কাদাপানিতে একাকার সড়ক। এর ওপর দিয়ে চলছে ভ্যানগাড়ি, মোটরসাইকেল, রিকশা ও অটোরিকশা। কাদা ছড়িয়ে ছিটিয়ে অবস্থা এমন, হাঁটাও দায় হয়ে পড়েছে।

এই চিত্র জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের পয়লা-রুকনাই দক্ষিণপাড়া সড়কের। এই সড়কে নিয়মিত যাতায়াত ওই ইউনিয়নের অন্তত ছয়টি গ্রামের ১৫ হাজার মানুষের।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, সামান্য বৃষ্টিতেই এই দুই কিলোমিটার রাস্তা কাদায় ভরে যায়। এ সময় এই রাস্তা দিয়ে হেঁটেও চলাচল করা যায় না। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগ বাড়ে। এলাকাবাসী এই প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা পাকা করার দাবি অনেক আগে থেকে জানাচ্ছেন। কিন্তু এই রাস্তা পাকাকরণের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। সড়কটি দিয়ে রুকনাই, রুকনাই দক্ষিণপাড়া, খাসিমারা, নলকুড়ি, চাড়াইলদার, পুঠিয়াপাড়া ও নলছিয়া গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। 

গতকাল মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কটি পুরোই কাঁচা। ওই সড়কের দুই কিলোমিটার অংশে ছোট-বড় অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তাতে বৃষ্টির পানি জমে আছে। পুরো সড়কেই কাদা জমে আছে। পুরো সড়কে কাদাপানিতে মাখামাখি। এর মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। অনেক সময় যানবাহন ঠেলে পার করাতে হচ্ছে।

রুকনাই গ্রামের স্কুলশিক্ষক মো. মাসুদ বলেন, বছরের পর বছর এভাবে সড়কটি পড়ে আছে। কারও কোনো গরজ নেই। এখন তো হাঁটাও দায় হয়ে পড়েছে। পুরো সড়ক কাদাপানিতে একাকার। যানবাহন তো দূরের কথা, বর্ষা মৌসুমে হেঁটেও যাতায়াত করা যায় না। এই রাস্তায় না এলে কেউ দুর্ভোগের সীমা জানতে পারবেন না। একটি রাস্তার কারণে ওই সব গ্রামের মানুষ সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। রাস্তার কারণে এই এলাকায় ভালো কোনো পরিবার বিয়েশাদিও করাতে আসে না। 

পাকা বা সংস্কার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সড়কে চলাচলকারী রুকনাই গ্রামের কৃষক নয়া মিয়া বলেন, ‘রাস্তাডা (সড়ক) আইজ্ঞের মেল্লা দরকার। হাইটেও (হাঁটা) চলা যাই না। এই রাস্তার জন্যে ভালো মানুষ এই গ্রামে বিয়েশাদি দিতে বা করাইতে আহে (আসা) না। এডা (একটা) মানুষ অসুখ হয়ে পড়লে, হাসপাতালে নেয়ার বৃদ্ধি নাই। যুগ যুগ ধরেই এইভাবে চলছি। এল্ল্যা (সামান্য) বৃষ্টি আইলে, কয়দিন (কয়েক দিন) আর হাইটেও (হেঁটে) যাওয়া যায় না।’ 

রবিন মাহমুদ নামে কলেজপড়ুয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেও রাস্তার কোনো চিহ্ন ঠিক থাকে না। প্রায়ই শিক্ষার্থীসহ লোকজন কাদাপানিতে পড়ে আহতও হচ্ছেন। এই রাস্তার জন্য ওই সব গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন।’ 

মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, ‘সত্যিই ওই সড়ক দিতে চলাচলে লোকজনকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ওই সড়কটি আমি কয়েকবার সরেজমিনে দেখে আসছি। শুনেছি, ওই সড়কটি পাকাকরণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। সব প্রক্রিয়া শেষ করে দ্রুত সড়কটি নির্মাণের দাবিও জানাচ্ছি।’ 

জামালপুরের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সায়েদুজ্জামান সাদেক বলেন, জামালপুর সড়ক উন্নয়ন নামের একটি প্রজেক্ট শুরু হবে। ওই প্রজেক্টে সড়কটি পাকা করা হবে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে ওই কাঁচা সড়কটি পাকা করা হবে।