দিনাজপুরে বন কর্মকর্তার মাথা ফাটালেন অবৈধ দখলদারেরা

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার মালিপাড়া মৌজায় বন বিভাগের জমিতে অবৈধভাবে নির্মাণ করা বাড়ি ভেঙে দিয়েছে বন বিভাগ
ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে বন বিভাগের জমিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে বাধা দেওয়ায় বন বিভাগের বিট কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীরা তাঁর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছেন। এ সময় ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তাও আহত হন।

আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নের কেন্দুয়া মালিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানা-পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার পর হামলাকারী কাউকে আটক করতে পারেনি। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্থানীয় এক ইউপি সদস্যকে থানায় নেওয়া হয়েছে।

ঘটনার পর দুপুরে নবাবগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনিসুর রহমান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান ফারুক ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাওহীদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় প্রশাসনের উপস্থিতিতে বন বিভাগের লোকজন সেখানে অবৈধভাবে নির্মাণাধীন স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন।

বন বিভাগের জমিতে গত সোমবার সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করেন বাবলু মিয়া। আজ সকালে সেই সীমানাপ্রাচীরের ভেতরে ইট দিয়ে পাকা ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন।
অবৈধ দখলদারদের হামলায় আহত বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা খায়রুল আলমকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
ছবি: সংগৃহীত

বন বিভাগের চরকাই রেঞ্জ কর্মকর্তা নিশিকান্ত মালাকার প্রথম আলোকে জানান, চরকাই রেঞ্জের আওতায় নবাবগঞ্জ উপজেলার গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নের কেন্দুয়া মালিপাড়া মৌজায় বন বিভাগের ১৩ শতক জমি রয়েছে। জমিটি কয়েক বছর ধরে ফাঁকা পড়ে ছিল। এরই মধ্যে স্থানীয় বাবলু মিয়া নামের এক ব্যক্তি গত সোমবার সেখানে ইট দিয়ে বাড়ির সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করেন। আজ সকালে সেই সীমানাপ্রাচীরের ভেতরে ইট দিয়ে পাকা ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেন বাবলু মিয়া। স্থানীয় সূত্রে বিষয়টি জানতে পেরে গোলাপগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন, বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা খায়রুল আলম ও বনপ্রহরী মোকাররম হোসেন ঘটনাস্থলে যান। সেখানে তাঁরা অবৈধ দখলদার বাবলু মিয়াকে বন বিভাগের জায়গায় বাড়ি নির্মাণে বাধা দেন। এ সময় বাবলু মিয়া, তাঁর পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় কয়েকজন মিলে তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে বিট কর্মকর্তা খায়রুল আলম ও ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন আহত হন।

স্থানীয় মানুষেরা ঘটনাস্থল থেকে তাঁদের উদ্ধার করে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেন। সেখানে বিট কর্মকর্তা খায়রুল আলমের অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

বাবলু মিয়া ও তাঁর লোকজন ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। নবাবগঞ্জ থানা সূত্রে জানা গেছে, বন বিভাগের জমিতে অবৈধভাবে বাড়ি নির্মাণে বাধা দেওয়ার ঘটনায় দুজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বন বিভাগের বনপ্রহরী মোকাররম হোসেনের পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।