৫৩ বছর ধরে নৌকার প্রার্থী তোফায়েল আহমেদ

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ
ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ ১২তমবারের মতো ‘নৌকা’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। ১৯৭০ সালে মাত্র ২৭ বছর বয়সে তিনি প্রথমবার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন। ৫৩ বছর পর ৮০-তে পৌঁছেও দলীয় মনোনয়নে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লড়বেন। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ আটবারের সংসদ সদস্য।

১৯৪৩ সালের ২২ অক্টোবর ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামে তোফায়েল আহমেদের জন্ম। তিনি ১৯৬৪ সালে বিএসসি পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এমএসসি পাস করেন। কলেজজীবনেই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন তোফায়েল আহমেদ। বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে ১৯৬৪ সালে ইকবাল হল (বর্তমানে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ছাত্র সংসদের ক্রীড়া সম্পাদক এবং ১৯৬৬-৬৭ সালে ইকবাল হল ছাত্র সংসদের সহসভাপতি হন। ১৯৬৭ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) ছিলেন। ১৯৬৯ সালের গণ–অভ্যুত্থানের নেতৃস্থানীয়দের একজন ছিলেন তিনি। ১৯৬৯ সালে তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। পরের বছর তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে মাত্র ২৭ বছর বয়সে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন তোফায়েল আহমেদ। তিনি ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। ‘মুজিববাহিনী’র অঞ্চলভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত চার প্রধানের একজন তিনি। বরিশাল, পটুয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া ও পাবনা নিয়ে গঠিত মুজিববাহিনীর পশ্চিমাঞ্চলের দায়িত্বে ছিলেন তোফায়েল আহমেদ। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১০ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগরে ‘বাংলাদেশ গণপরিষদ’ প্রতিষ্ঠার অন্যতম সংগঠকও তিনি। পরের বছর গণপরিষদ গৃহীত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় তিনি অংশগ্রহণ ও স্বাক্ষর করেন।

তোফায়েল আহমেদকে ১৯৭২ সালের ১৪ জানুয়ারি প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় রাজনৈতিক সচিব হিসেবে নিয়োগ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৩ সালে নিজের জেলা ভোলা থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধুর সপরিবার হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তোফায়েল আহমেদ শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী এবং ২০১৩ ও ২০১৪ সালে বাণিজ্যমন্ত্রী হন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ১৯৭৫ সাল থেকে টানা ৩৩ মাসসহ অসংখ্যবার জেল খেটেছেন তিনি। জনপ্রতিনিধি হিসেবে চেষ্টা করেছেন সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ে জনসাধারণের দাবিগুলো জাতীয় সংসদে উত্থাপন করার। তাঁর জীবনের শেষ ইচ্ছা, ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণ, ভোলায় একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও আন্তর্জাতিকমানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণ করা।