আনোয়ারায় নির্মাণের এক বছরের মধ্যে পানির নিচে চার কোটি টাকার স্লুইসগেট

পানিতে ডুবে আছে চট্টগ্রামের আনোয়ারার বাকখাইন কান্দরিয়া খালের মুখে নির্মিত চার কোটি টাকার স্লুইসগেট। সম্প্রতি উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের বাকখাইন কান্দরিয়া খালের পাশে
ছবি: প্রথম আলো

দুই পাশে তৈরি হয়েছে দুটি বড় খাল। এসব খাল দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে জোয়ারের পানি। পানির তল থেকে খানিকটা অস্তিত্ব জানান দিলেও বোঝার উপায় নেই এটি একটি স্লুইসগেট। চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় চাতরী ইউনিয়নে গিয়ে বাকখাইন কান্দরিয়া খালের মুখে নির্মিত স্লুইসগেটের অবস্থা এমন বেহাল। প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্লুইসগেটটি চালু হওয়ার এক বছরের মধ্যেই এভাবে অকেজো হয়ে পড়েছে। ফলে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে এলাকার প্রায় ৬০০ একরেরও বেশি জমিতে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৮ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে স্লুইসগেটের নির্মাণকাজ শুরু করে। ২০২০ সালে কাজ শেষ হয়। কিন্তু এক বছর পর ২০২১ সালেই পানির ধাক্কায় গেটের পাশের মাটি সরে যায়। দিনে দুবার জোয়ারের পানি ওঠানামা করার সময় স্লুইসগেটটি একেবারে পানির নিচে তলিয়ে যায়। দুই পাশে বড় খাল হয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে খেত-খামার ভাসিয়ে নিয়ে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন সেন বলেন, স্লুইসগেটের ওপর দিয়ে হেঁটে বাকখাইন গ্রামের লোকজন ও শিক্ষার্থীরা আনোয়ারা সদরে যাতায়াত করত। এখন শিকলবাহা খাল পাড়ি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাঁদের। এ ছাড়া পানি ঢুকে পড়ায় চাতরী ইউনিয়নের ছয়টি গ্রামে চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। এসব গ্রামের পুকুরগুলোও ডুবে যাওয়ায় দুর্ভোগের শেষ নেই স্থানীয় বাসিন্দাদের।

এক বছর ধরে উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের কেঁয়াগড়, সিংহরা, চাতরী ৫ নম্বর ওয়ার্ড, ডুমুরিয়া, রূদুরা ও পটিয়া উপজেলার বাকখাইন গ্রামের ছয় শ একরেরও বেশি জমিতে পানি উঠে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। অতিবৃষ্টির পাশাপাশি জোয়ারের পানি বাড়লে এসব গ্রামের অনেকের বসতঘরেও পানি ওঠে বলে জানান চাতরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, পুকুরের মাছও ভেসে যায় পানি বাড়লে। ফলে কৃষিজীবী জনগণের দুর্ভোগের শেষ নেই।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী অনুপম দাশ প্রথম আলোকে বলেন, কান্দরিয়া খালে স্লুইসগেটটি আগের চেয়ে বড় করে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় অনুমোদনের জন্য প্রকল্পটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।