সিলেটের ৪ উপজেলার তিনটিতেই চেয়ারম্যান হলেন প্রবাসী প্রার্থীরা

(উপরে বাঁ থেকে) সুজাত আলী রফিক ও মো. বদরুল ইসলাম, (নিচে বাঁ থেকে) সুহেল আহমদ চৌধুরী ও মনজুর কাদির সাফি চৌধুরী

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে সিলেটের চার উপজেলার তিনটিতে চেয়ারম্যান পদে ১০ জন প্রবাসী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ওই তিনটিতেই বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন প্রবাসী প্রার্থীরা। গতকাল বুধবার রাতে বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফলে এ তথ্য জানা যায়।

সিলেট সদরে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সুজাত আলী রফিক, দক্ষিণ সুরমায় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. বদরুল ইসলাম, গোলাপগঞ্জে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী ও বিশ্বনাথে জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি (বহিষ্কৃত) ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সুহেল আহমদ চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে বদরুল ও মঞ্জুর যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এবং সুহেল যুক্তরাজ্যপ্রবাসী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গোলাপগঞ্জে নির্বাচিত মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান। ২০২২ সালের ২১ জুন উপনির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। অন্যদিকে বিশ্বনাথের মোহাম্মদ সুহেল আহমদ চৌধুরী আগে একবার উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। বাকি দুই উপজেলায় প্রথমবারের মতো তাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন।

সদরে চেয়ারম্যান পদে সুজাত আলী রফিক ২৩ হাজার ২৬৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পরিচিত সামছুল ইসলাম পেয়েছেন ১৩ হাজার ৮৬৩ ভোট। এ উপজেলায় ভোট পড়েছে ৩৮ দশমিক ২১ শতাংশ। দক্ষিণ সুরমায় চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে মো. বদরুল ইসলাম ২০ হাজার ৬১৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শামীম আহমদ ১৪ হাজার ৯৫৫ ভোট পেয়েছেন। এখানে ভোট পড়েছে ৩৪ দশমিক ৭১ শতাংশ।

অন্যদিকে গোলাপগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হওয়া মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী ৩৭ হাজার ৭৮৯ ভোট পেয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবু সুফিয়ান পেয়েছেন ২৯ হাজার ১৭ ভোট। এখানে ভোট পড়েছে ৩০ দশমিক ৮৮ শতাংশ। বিশ্বনাথ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১৩ হাজার ৩২২ ভোট পেয়ে জয়ী হন সুহেল আহমদ চৌধুরী। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন আহমদ। তিনি ১২ হাজার ৯৬৮ ভোট পেয়েছেন। উপজেলাটিতে মোট ৩২ দশমিক ১৩ শতাংশ ভোট পড়েছে।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়ী যাঁরা

সিলেট সদরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে মো. সাইফুল ইসলাম নির্বাচিত হন। পেশায় সাংবাদিক সাইফুল দল নিরপেক্ষ হিসেবে পরিচিত। এখানে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সদর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছা. হাছিনা আক্তার নির্বাচিত হন। তাঁরা প্রথমবারের মতো এবার নির্বাচিত হয়েছেন। দক্ষিণ সুরমায় ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি তালামীয-সমর্থক হিসেবে পরিচিত। এখানে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন আইরিন রহমান (কলি)। তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় নেই। দুজনই বর্তমানে ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন।

গোলাপগঞ্জে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন তালামীয-সমর্থিত হিসেবে পরিচিত মো. নাবেদ হোসেন। এখানে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন সেলিনা আক্তার (শিলা)। তাঁর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। তাঁরা উভয়েই প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন। বিশ্বনাথে ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক যুবলীগ নেতা মুহিবুর রহমান (সুইট)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেত্রী হিসেবে পরিচিত মোছা. করিমা বেগম। তাঁরা উভয়েই এবার প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হন।