দুই লাখ টাকার জন্য আটকে আছে সিদ্দিকার চিকিৎসা

সিদ্দিকা বেগম
ছবি: সংগৃহীত

তিন বছর আগে ছেলের বয়স যখন ১৩ বছর, সে সময় স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয় সিদ্দিকা বেগমের (৩২)। মা–বাবা মারা যাওয়ায় ছেলেকে নিয়ে সিদ্দিকা আশ্রয় নেন ভাইয়ের বাড়িতে। সেখান থেকে মানুষের বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে ছেলেকে স্কুলে পড়াচ্ছিলেন তিনি। প্রায় আট মাস আগে স্তন ক্যানসার ধরা পড়ে তাঁর। নিজের চিকিৎসা ও ছেলের লেখাপড়া নিয়ে দিশেহারা অবস্থা সিদ্দিকার।

সিদ্দিকা বেগম পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের মীরগড় এলাকার মৃত ঝরু মোহাম্মদের মেয়ে। সিদ্দিকার একমাত্র ছেলে স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ে।

সিদ্দিকা বেগম বলেন, ২০২১ সালে প্রথমে তাঁর বাঁ পাশের স্তনে টিউমার ধরা পড়ে। পরে পঞ্চগড়ের চিকিৎসক তাঁকে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। নিজের কিছু জমানো টাকা আর স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পরপর দুবার তাঁর অস্ত্রোপচার করানো হয়। দিন দিন সমস্যা বাড়তে শুরু করলে তিনি দিনাজপুরের পার্বতীপুরে একটি হাসপাতালে চিকিৎসকের কাছে যান। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁর স্তন ক্যানসার শনাক্ত হয়। মানুষের কাছে সাহায্য তুলে ২১ দিন পরপর ১৫ হাজার টাকা খরচ করে ছয়বার থেরাপি দেওয়া হয় তাঁকে। বর্তমানে গাজীপুরের একটি ক্যানসার ফাউন্ডেশনের আওতায় চিকিৎসাধীন তিনি। সেখান থেকে তাঁকে জানানো হয়েছে, জরুরি অস্ত্রোপচার প্রয়োজন তাঁর। অস্ত্রোপচার ও রেডিও থেরাপির জন্য এখন তাঁর দুই লাখ টাকা প্রয়োজন। নিজের কোনো সহায়-সম্বল না থাকায় চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহায়তা চান তিনি।

সিদ্দিকা বেগম বলেন, ‘আমি শুধু আমার ছেলেটার জন্য বাঁচতে চাই। এ সময় আমি মরে গেলে ছেলেটার ভবিষ্যৎ শেষ হয়ে যাবে। এবার সে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। আমি না থাকলে দুনিয়াতে ওকে দেখার কেউ থাকবে না। আমার চিকিৎসার জন্য সবার সহযোগিতা চাই।’

ধাক্কামারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, সিদ্দিকা বেগম মানুষের বাড়িতে কাজ করে খুব কষ্ট করে তাঁর ছেলেকে পড়াশোনা করাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে তিনি আবার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন। সবাই যদি তাঁর চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসেন, তবে হয়তো তিনি সুস্থ হয়ে যেতেন।