স্থানীয়দের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ

ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষের পর স্থানীয় বাসিন্দারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক আটকে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। আজ রাত সাড়ে আটটায় দুই নম্বর গেট এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তিন ছাত্র আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মচারীর সঙ্গে ছাত্রলীগের এক কর্মীর কথা-কাটাকাটির জের ধরে এ সংঘর্ষ হয় বলে জানা গেছে।

সংঘর্ষে জড়ানো ছাত্রলীগের এ অংশ উপপক্ষ বিজয় নামে পরিচিত। এ উপপক্ষের নেতৃত্ব দেন সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ হামলায় তিন থেকে চারজন আহত হয়েছেন। তাঁরা এটি সমাধানের চেষ্টা করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় সাপ্তাহিক বাজারের দিন ছিল। এদিনে অন্য দিনের তুলনায় লোকজনের ভিড় বেশি হয়। বিকেল পাঁচটার দিকে ওই বাজারে ইফতারি কিনতে গিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কর্মচারী বখতিয়ার উদ্দিন। তিনি হাটহাজারীর ফতেপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতিও। বাজারে তাঁর মোটরসাইকেলের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। পরে এ নিয়ে বখতিয়ারের সঙ্গে ওই ছাত্রের কথা-কাটাকাটি হয়।

এ সময় ঘটনাস্থলে ছাত্রলীগ কর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী জামিন আহমেদও উপস্থিত ছিলেন। একপর্যায়ে বখতিয়ারের সঙ্গে জামিনেরও কথা-কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে উপস্থিত ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে বখতিয়ারের হাতাহাতি হয়। হাতাহাতির এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক কর্মচারী ও হাটহাজারী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে এলে আরেক দফা হাতাহাতি হয়।

এরপর বখতিয়ার ও মিজানুরের অনুসারীরা লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগের কর্মীদের ধাওয়া দেয়। এ খবর জানাজানি হওয়ার পর বিজয় উপপক্ষের অনুসারীরা আলাওল এবং এ এফ রহমান হল থেকে বের হয় স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।

জানতে চাইলে বখতিয়ার উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই ছাত্রলীগ নামধারী বখাটেরা তাঁকে মারধর করেছে। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা এর প্রতিবাদ করেছেন।

ছাত্রলীগ কর্মী জামিন আহমেদ দাবি করেন, তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছিল। এতে তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ ঘটনা হলের জ্যেষ্ঠদের জানালে সবাই মিলে এসব হামলা প্রতিহত করেছেন।

জানতে চাইলে গতকাল রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মো. সেকান্দর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডিকে নিয়ে বৈঠকে বসেছি। এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’