১৪টি শকুনের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে সিলেটে মানববন্ধন

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন প্রাধিকারের উদ্যোগে মহাবিপদাপন্ন শকুন ও প্রাণী হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরের আলুরতল এলাকায়
ছবি : প্রথম আলো

মৌলভীবাজারে ১৪টি মহাবিপদাপন্ন শকুনের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনাসহ অন্যান্য বন্য প্রাণী হত্যার প্রতিবাদ ও এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী অধিকার ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণবিষয়ক সংগঠন ‘প্রাধিকার’।

মঙ্গলবার বেলা একটায় নগরের সিলেট বন্য প্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রসংলগ্ন আলুরতলা এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

প্রাধিকারের সদস্যরা জানিয়েছেন, কয়েক দিন আগে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার একাটুনা ইউনিয়নের বরকাপন, বুড়িকোনা ও রসুলপুরের মাঠ থেকে মহাবিপদাপন্ন শকুনের ১৪টি পচা-গলা মৃতদেহ উদ্ধার করে প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর জোট (আইইউসিএন) বাংলাদেশের গবেষক দল এবং বন বিভাগের বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ। মৌলভীবাজারের ওই এলাকায় আইইউসিএন এবং বন বিভাগের তল্লাশিতে আরও তিনটি মৃত বাংলা শকুন, শিয়ালের মাথার খুলি, মৃত শিয়াল, চার-পাঁচটি মৃত কুকুর ও দু-তিনটি কীটনাশকের খালি প্লাস্টিকের কৌটা পাওয়া যায়।

এ ছাড়া গত ২২ ফেব্রুয়ারি মৌলভীবাজারে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ট্রেনের ধাক্কায় একটি মায়াহরিণ আহত হয়। এ সময় ট্রেন থামিয়ে আহত হরিণটি ধরে জবাই করেন ট্রেনের সহকারী চালকসহ কয়েকজন কর্মচারী। এ দুটি ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে প্রাধিকার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।

মানববন্ধনে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ মেহেদি হাসান খান, সহযোগী অধ্যাপক অনিমেষ চন্দ্র রায়, প্রভাষক মাসুদ পারভেজ; সিলেট জেলা দুগ্ধ খামারের ভেটেরিনারি সার্জন আবদুল মজিদ; বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিম; ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সমন্বয়ক আশরাফুল কবির; প্রাধিকারের সভাপতি কানন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক আরিজ আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কর্মসূচিতে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। এ সময় তাঁদের হাতে ছিল ‘বন্য প্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল গড়ে তুলুন’, ‘বন্য প্রাণী হুমকির মুখে প্রশাসন নীরব কেন’, ‘বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন ২০২২-এর যথাযথ প্রয়োগ চাই’, ‘মহাবিপদাপন্ন শকুনকে রক্ষা করুন’, ‘লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে রেলপথ অপসারণ চাই’ লেখা প্ল্যাকার্ড।

কর্মসূচি শেষে প্রাধিকারের সাধারণ সম্পাদক আরিজ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, কর্মসূচিতে বন্য প্রাণী হত্যার প্রতিবাদ ও দোষী ব্যক্তিদের বিচার চেয়ে গণস্বাক্ষর নেওয়া হয়। এ প্রতিবাদলিপি শিগগিরই সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে পৌঁছে দেওয়া হবে। প্রাধিকার এ কর্মসূচির মাধ্যমে মূলত দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রয়োগের মাধ্যমে ভবিষ্যতে বন্য প্রাণী হত্যায় মানুষকে নিরুৎসাহিত করার আহ্বান জানিয়েছে।