বেগমগঞ্জের সংসদ সদস্যের অনুসারীদের বিরুদ্ধে দোকানে হামলা-লুটপাটের অভিযোগ

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী শহরে শুক্রবার রাতে দুটি দোকানে হামলা–ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় একদল দুর্বৃত্ত। শনিবার সকালে শহরের করিমপুর রোড এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী শহরে গতকাল শুক্রবার রাতে দুটি দোকানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর অভিযোগ, বেগমগঞ্জ–৩ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) মামুনুর রশিদের অনুসারীরা এই হামলা চালিয়েছেন। ঘটনার সময় পৌর আওয়ামী লীগের এক নেতাও হামলাকারীদের সঙ্গে ছিলেন।

দোকান দুটির মালিক চৌমুহনী সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মেহের উল্যাহ। গতকাল রাত আড়াইটা থেকে আনুমানিক সাড়ে চারটা পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে বলে তাঁর দাবি। বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশ এ সময় সড়কের ওপর পড়ে থাকা বেশ কিছু মালামাল জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।

আজ শনিবার স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাত আড়াইটার দিকে ৩০ থেকে ৩৫ জনের একটি দল লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমিন ইলেক্ট্রনিকস ও ক্যারিয়ার ইলেকট্রনিকস দোকানের তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। তাঁরা দোকান দুটির সামনের সাইনবোর্ড খুলে ফেলেন এবং দোকানের পণ্য রাখার একাধিক তাক বাইরে বের করে সড়কের পাশে ফেলে দেন। মূল্যবান মালামাল লুট করে দুটি পিকআপ ভ্যানে করে নিয়ে যান।

ব্যবসায়ী মেহের উল্যাহর ভাষ্য, তিনি দেড় বছর আগে প্রয়াত হাজি শরাফত উল্যাহর ছেলেদের কাছ থেকে দোকান দুটি কিনে নেন। এরপর দোকান দুটি তাঁর ভাতিজাদের কাছে ভাড়া দেন। মাসখানেক আগে চৌমুহনী পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইউছুফের ভাতিজা মো. সোহান দলবল নিয়ে এসে আকস্মিকভাবে তাঁর দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেন। এই কাজে সহায়তা করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদের অনুসারী রায়হান, রাশেদ, মাসুদ প্রমুখ। সংসদ সদস্যের মধ্যস্থতায় সালিস বৈঠকে দোকানের চাবি তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

মেহের উল্যাহর অভিযোগ, গতকাল রাতে চৌমুহনী পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেনের নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৩৫ জন তাঁর দোকানের তালা ভেঙে লুটপাট শুরু করেন। তিনি খবর পেয়ে তাঁর ভাতিজাদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় তাঁরা বাধা দিলে দুর্বৃত্তদের সঙ্গে তাঁদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। দুর্বৃত্তরা ভাঙচুর করে দোকানের ভেতর থেকে আনুমানিক ৩৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যান। দোকানে ঝুলিয়ে দেন তালা।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদের মুঠোফোনে আজ একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি তা ধরেননি।

তবে তাঁর অনুসারী ও পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মনির হোসেন বলেন, জায়গার মালিকানা নিয়ে মেহের উল্যাহর সঙ্গে সোহানের বিরোধ রয়েছে। বিষয়টি মীমাংসার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য উদ্যোগ নেন। কিন্তু মেহের উল্যাহর কারণে মীমাংসা হয়নি। গতকাল রাতে দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলার কথা শুনে তিনি ঘটনাস্থলে যান। কোনো লুটপাটের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন না।

বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক বলেন, দোকানের জায়গার মালিকানা নিয়ে বিরোধের জেরে গতকালের ঘটনা ঘটেছে। মেহের উল্যাহ আজ সকালে থানায় এলেও লিখিত কোনো অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।