‘বাঘ থাকলে সুন্দরবন থাকবে’
সুন্দরবনের বাস্তুসংস্থান ও টিকে থাকার জন্য বাঘের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বাঘ থাকলে সুন্দরবন থাকবে। বাঘ না থাকলে বাস্তুসংস্থান নষ্ট হয়ে সুন্দরবনও বিলীন হবে। বাঘ কেবল আমাদের গর্বই নয়, সাহসেরও প্রতীক। মানুষের লোভের কারণে বাঘকে বিলুপ্ত হতে দেওয়া যাবে না।
বিশ্ব বাঘ দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সকালে বাগেরহাটের মোংলায় আয়োজিত এক আলোচনা সভা বক্তারা এ কথা বলেন।
মোংলা উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মিলনায়তনে ‘বাঘ ও এর আবাসস্থল সুন্দরবন রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশ ও স্থানীয় প্রশাসন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, এই উপকূল টিকে আছে সুন্দরবনের জন্য। আর সুন্দরবন টিকে আছে বাঘের জন্য। বিষ দিয়ে মাছ মারা, বৃক্ষনিধন, বন্য প্রাণী হত্যা, চোরাচালান সিন্ডিকেটসহ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বাঘ ও বাঘের আবাসস্থল সুন্দরবন বিপর্যস্ত। তাই বাঘ ও সুন্দরবন রক্ষায় বিশ্বনেতা, সরকার ও বনসংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ পৃথক কর্মসূচির আয়োজন করে। সুন্দরবন সুরক্ষা সহব্যবস্থাপনা কমিটি, বাঘ বন্ধু, ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআরটি), কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপ (সিপিজি), স্থানীয় পিপলস ফোরাম এবং সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল জেলে, মৌয়ালসহ বনজীবীরা এতে অংশ নেন।
সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা অঞ্চলের বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি বিভাগের ডিএফও নির্মল কুমার পাল।
এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান, করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির, মোংলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, মোংলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার প্রমুখ।
আর শরণখোলা বাজারে শোভাযাত্রা শেষে স্থানীয় প্রদীপন ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা হয়। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন শরণখোলার ইউএনও মো. নুর ই আলম সিদ্দিকী, শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম হোসেন, সুন্দরবনের শরণখোলে সহব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন প্রমুখ।
এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সুন্দরবনসংলগ্ন উপকূলীয় জেলাগুলোতে শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রতিবছরের ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস পালন হয়। বাঘের প্রাকৃতিক আবাস রক্ষা করা ও বাঘ সংরক্ষণের জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে ২০১০ সালে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠিত বাঘ অভিবর্তনে এ দিবসটির সূচনা হয়।