দিনাজপুর-২ আসনে (বিরল-বোচাগঞ্জ) বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মৌনমিছিল কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ (শুক্রবার) বেলা ১১টার দিকে উপজেলা শহরে এ কর্মসূচি পালন করেন মনোনয়ন না পাওয়া তিন নেতার অনুসারী ব্যক্তিরা।
এর আগে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা একাংশের নেতা-কর্মীরা বিরল বাজার এলাকায় বকুলতলা মোড়ে জড়ো হতে শুরু করেন। পরে সেখান থেকে মৌনমিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ মিনার চত্বরে গিয়ে শেষ হয় এবং সেখানে বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভায় যোগ দেন তাঁরা। সভায় বক্তব্য দেন পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আসাদুল হক, সহসভাপতি ইস্কান্দার হাসান, জেলা বিএনপির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক হামিদুর রহমান প্রমুখ।
‘মনোনয়নবঞ্চিত’ তিন নেতা হলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ, সহসভাপতি মোজাহারুল ইসলাম এবং শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম। ৩ নভেম্বর দলের মহাসচিব এই আসন (দিনাজপুর-২) থেকে মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সাদিক রিয়াজের নাম ঘোষণা করেন। তিনি জেলা বিএনপির নির্বাহী সদস্য ও বোচাগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা।
মৌনমিছিলে অংশ নেওয়া কয়েকজন জানান, আসনটিতে চারজন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন, কিন্তু দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন সাদিক রিয়াজ। তাঁরা বলছেন, দলের হাইকমান্ড ঘোষণা দিয়েছিলেন দীর্ঘ সময় ধরে যাঁরা বিগত সরকারের সময়ে নির্যাতিত হয়েছেন, মামলা হামলার শিকার হয়েছেন এসব বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেবেন। কিন্তু প্রার্থিতা ঘোষণায় তাঁরা কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তির নাম না দেখে হতাশ হয়েছেন। এ জন্য প্রার্থিতা পরিবর্তনের জোর দাবি জানাচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজিমপুর ইউনিয়নের এক সাবেক ছাত্রনেতা বলেন, মনোনয়ন না পাওয়া এই তিনজনের মধ্যে যেকোনো একজনের নাম ঘোষণা করলে দলের মধ্যে কোন্দল থাকবে না। এই আসনে অন্য একটি দল থেকে যিনি প্রার্থী হয়েছেন, তিনিও শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী। নিজেদের মধ্যে এই কোন্দল থাকলে মাঝখান দিয়ে অন্য দলের প্রার্থী সুযোগ নেবে।
দুপুর ১২টায় উপজেলার শহীদ মিনার চত্বরে ‘বিপ্লব ও সংহতি’ দিবসের আলোচনা সভায় উপস্থিত হন মনোনয়নবঞ্চিত ওই তিন নেতা। পরে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে বক্তব্য দেন তাঁরা। এর মধ্যে বজলুর রশিদ বলেন, ‘সাদিক রিয়াজ রাজনীতির মাঠে কোনো আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন না। বিগত দিনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে সব আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন। আমরা মামলার আসামি হয়ে জেলহাজতে ছিলাম, কিন্তু তিনি রেহাই পেয়েছেন। আওয়ামী লীগকে যিনি পুনর্বাসনের চেষ্টা করেছেন, তাঁকে বাদ দিয়ে বিরল-বোচাগঞ্জের যে কাউকে মনোনয়ন দিলে আমরা মেনে নেব।’
মোজাহারুল ইসলাম বলেন, আসনটি ঝুঁকিপূর্ণ। দল যাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে, বিগত দিনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকায় সাধারণ ভোটাররা তাঁকে চান না।
দল যদি সিদ্ধান্তে অনড় থাকে, সে ক্ষেত্রে ভূমিকা কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে ‘মনোনয়নবঞ্চিত’ নেতারা বলেন, তাঁদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল, কিন্তু কোনো কলহ ছিল না। তাঁরা শুধু দলের উচ্চ পর্যায়ের কাছে সেখানকার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরেছেন। দল আবার জরিপ করুক, প্রকৃত অবস্থা বিবেচনা করে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করুক।