ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে সংবিধানকে দলীয় দলিলে পরিণত করা হয়েছে: আমির খসরু

সিলেটে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। মঙ্গলবার বিকেলে নগরের একটি হোটেলে
ছবি: প্রথম আলো

ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে সংবিধানকে দলীয় দলিলে পরিণত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ মঙ্গলবার বিকেলে সিলেট নগরের দরগাহ গেট এলাকার একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। জেলা বিএনপির উদ্যোগে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা’ শীর্ষক ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণমূলক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘দেশ আজ গর্তের মধ্যে পড়েছে। গর্ত থেকে উত্তরণের জন্যই রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। আজ রাষ্ট্রে মানবাধিকার নাই, ভোটাধিকার নাই, কথা বলার স্বাধীনতা নাই, জীবনের নিরাপত্তা নাই। ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার জন্য সংবিধানকে দলীয় দলিলে পরিণত করা হয়েছে। সরকারের বিদায় হওয়ার পর দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।’

আমির খসরু আরও বলেন, বর্তমান সরকারের বিদায়ের পর বিএনপি কোন নীতিতে দেশ পরিচালনা করবে, এমন বিষয়কে সামনে রেখেই দীর্ঘ গবেষণার পর রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের এই রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে পারলে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রতিষ্ঠা করা হবে। সংসদের উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ থাকবে।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সংসদ বহাল রেখে জাতীয় নির্বাচন করলে নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতেই থাকবে। এ পদ্ধতিতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে না। তাই জাতীয় নির্বাচনের তিন মাস আগে সংসদ ভেঙে দেওয়া অপরিহার্য। কিন্তু সংবিধান থেকে এটিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। জনবান্ধব সংবিধান প্রণয়ন করতে হলে সংবিধানে পরিবর্তন আনতে হবে। যাঁরা ক্ষমতা দখল করে আছেন, তাঁরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নন। তাই এটিকে সরকার বলা যায় না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করে আমাদের শত শত নেতা-কর্মীকে গুম-খুন করেছে। ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর নামে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিয়েছে। বিএনপি এরপরও শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করছে। কারণ, বিএনপি দেশে বিশৃঙ্খলা চায় না, বিএনপি শান্তি চায়।

আমির খসরু আরও বলেন, ‘যেখানে প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়, সেখানে সুবিচার পাওয়ার স্বপ্ন দেখা যায় না। আমরা বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতার জন্য একটি জুডিশিয়ারি কমিশন গঠনের কথা বলেছি। তারা অন্যায়ভাবে ক্ষমতা দখল করবে, অন্যায়ভাবে দেশ চালাবে। এর নামই আওয়ামী লীগ।’

জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও খন্দকার আবদুল মুক্তাদির। সভার শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আশিক উদ্দিন, সাজেদুল করিম, মহানগর লেবার পার্টির সভাপতি মাহবুবুর রহমান খালেদ, সিলেট পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি শামিমুর রহমান, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহ আতিকুল হক, খালেকুর রহমান, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোজাম্মেল হক, জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক সাঈদ আহমদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।