বাজারে এখনো নির্বাচনের প্রভাব

বাজারের প্রচুর সবজি থাকলেও সরবরাহ ঘাটতির কথা বলে বেশি দাম নিচ্ছেন বিক্রেতারা। প্রতিটি সবজির দাম ৫–১০ টাকা বেড়েছে। আজ সকালে চট্টগ্রামের দুই নম্বর গেট এলাকার কর্ণফুলী কমপ্লেক্স কাঁচা বাজারেপ্রথম আলো

সপ্তাহ ব্যবধানে চট্টগ্রামের খুচরা বাজারে বেড়েছে শীতকালীন সবজির দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নির্বাচনের কারণে বাজারে সরবরাহ কম। ভোট শেষেও এখনো সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। তাই সব সবজির দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি।

আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট ও কর্ণফুলী কমপ্লেক্স বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজি প্রতি কেজিতে অন্তত পাঁচ টাকা বেড়েছে। তবে শিমের বিচিতে দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। বছরের প্রথম দিনে এই দুই বাজারে প্রতি কেজি দেশি শিমের বিচি বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। আর লাল শিমের বিচি বিক্রি হয়েছিল ১০০ টাকার আশপাশে।

দোকানিরা বলছেন, বাজারে মৌসুম অনুপাতে সবজির সরবরাহ কম। ফলে দাম বেড়েছে। রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদার আসলাম উদ্দিন বলেন, বাজারে সব সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। নির্বাচন, হরতাল ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে পরিবহন খরচ বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে সবজির দামে।

পাইকারি খুচরায় পার্থক্য বেশি, ভোগান্তিতে ভোক্তারা
চট্টগ্রামের খুচরা পর্যায়ে আজ প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। এ ছাড়া ঢ্যাঁড়স ৭৫  থেকে ৯০, ফুলকপি ৬০ থেকে ৭০, বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৪৫, বরবটি ৮০ থেকে ৯০ ও মানভেদে শিম ৭০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

তবে চট্টগ্রাম নগরের পাইকারি আড়তে এই সব সবজিতে দামের পার্থক্য অন্তত ১৫ টাকা। আর সর্বোচ্চ পার্থক্য ছিল ৩৫ টাকা। রিয়াজউদ্দিন বাজার আড়তে এসব সবজির দাম ছিল গড়ে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। প্রতিকেজি বাঁধাকপি বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। আর আলু বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা কেজি দরে। ভালো মানের শিম বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। একই শিমের খুচরায় দাম ছিল ৯০ টাকা।

রিয়াজউদ্দিন বাজার আড়তদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক শিবলী প্রথম আলোকে বলেন, বাজারে সরবরাহ কমায় সবজির দামে ৫-১০ টাকা বেড়েছে। তবে ৫০ টাকার নিচেই আড়তে সবজি পাওয়া যাচ্ছে। চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, ‘খুচরা পর্যায়ে ঘুরে আমি নিজেই সব সবজির দাম বাড়তি পেয়েছি। আড়তে ৪৫ টাকায় আলু বিক্রি হয়েছে। একই আলু খুচরা দোকানিরা ৭৫ টাকায় বিক্রি করছে।’

চট্টগ্রামের নগরের বিভিন্ন বাজারে কথা হয় অন্তত ১০ জন ভোক্তার সঙ্গে। তাঁরা বলেন, দেশে নির্বাচন, হরতাল, অবরোধ এসবকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ী ও দোকানিরা দাম বাড়িয়ে দেয় পণ্যের। কোনো উৎসব আসলেও তাঁরা অতিরিক্ত মুনাফার জন্য দাম বাড়িয়ে দেয়।

বহদ্দারহাট বাজারে মোহাম্মদ জাবেদ বলেন, ‘২ দিন আগেও ১৮০ টাকা শিমের বিচি কিনেছি। আজ বাজারে দেখলাম ২৮০ টাকা। দুই দিনে ১০০ টাকা বেড়ে গেছে।’

এ বিষয়ে কথা কথা হয় ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইনের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অতিরিক্ত মুনাফা লাভের জন্য ব্যবসায়ী ও বিক্রেতারা সবজির দাম বাড়িয়ে দেয়। পাইকারি আর খুচরার পার্থক্য অতিরিক্ত হওয়ার যৌক্তিকতা নেই। অসাধু ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের জিম্মি করে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে।