প্রবাহ ফেরাতে আবার খনন শুরু বুড়িতিস্তায়

উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়ন থেকে নাজিমখান ইউনিয়নের সোমনারায়ণ তেলিপাড়া পর্যন্ত আট কিলোমিটারে খনন শুরু হয়েছে। 

বুড়িতিস্তা নদীতে আবারও খনন শুরু হয়েছে। গতকাল কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার সোমনারায়ণ তেলিপাড়া গ্রামেছবি: প্রথম আলো

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বুড়িতিস্তা নদীতে তিন বছর পর ফের খননকাজ শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলার নাজিমখান ইউনিয়নের সোমনারায়ণ তেলিপাড়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই খননকাজ শুরু হয়। বন্যা ও জলাবদ্ধতা থেকে কৃষকদের রক্ষা করতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এ খননকাজ শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বুড়িতিস্তা নদীটি রাজারহাট সদর ইউনিয়ন ও চাকিরপশার ইউনিয়নে চাকিরপশার নদী নামে পরিচিত। ২০২১ সালে রাজারহাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের বুড়িতিস্তার উৎসমুখ ইটাকুড়ি এলাকা থেকে উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়ন পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার নদী খনন শুরু করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)। কিন্তু উৎসমুখের ইটাকুড়ি এলাকা থেকে ভাটিতে চাকিরপশার এলাকায় খননকাজ শুরু হলে স্থানীয় দখলদারেরা মামলা করে। মামলার জটিলতায় ২০২২ সালে খননকাজ বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় বিএডিসি প্রায় দুই কিলোমিটার খনন করে কাজ বন্ধ করে দেয়। এতে বুড়িতিস্তা নদীর উৎসমুখ চাকিরপশার এলাকার পাঠানহাট, ইটাকুড়ি, নাজিমখান এলাকার তেলিপাড়া, সোমনারায়ণ ও রথিগ্রাম এলাকায় প্রতিবছর জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এতে প্রায় ২ হাজার ২০০ একর জমিতে আমন উৎপাদন ব্যাহত হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবং জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের নির্দেশে আবার নদীর খননকাজ শুরু হয়েছে।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়ন থেকে উজানে নাজিমখান ইউনিয়নের সোমনারায়ণ তেলিপাড়া ব্রিজ এলাকা পর্যন্ত ১৫ দফায় প্রায় ৮ কিলোমিটার খননকাজ চলবে। প্রতি দফায় ২৪ লাখ ৯২ হাজার টাকা ব্যয়ে ৫৮০ মিটার জায়গা খনন করা হবে। সমতল থেকে ১২ ফুট গভীর করে এই নদী খনন চলবে। প্রথম দফার কাজ বৃহস্পতিবার নাজিমখান ইউনিয়নের সোমনারায়ণ তেলিপাড়া থেকে শুরু হয়েছে। রাজশাহীর কিডস পার্ক নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ খননকাজ করছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ৯০ দিনের মধ্যে খননকাজ শেষ করবে।

রামকৃষ্ণ গ্রামের কৃষক লুৎফর রহমান জানান, তিন বছর আগে এ বুড়িতিস্তা নদীর খনন শুরু হয়েছিল। উজানে চাকিরপশার নদীর ইটাকুড়ি এলাকায় খনন হয়েছে, ভাটিতে প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকা খনন হয়েছে। কিন্তু মাঝের এই ১৮ কিলোমিটার চাকিরপশার নদী অংশে অবৈধ দখলদারদের মামলা জটিলতায় খনন বন্ধ ছিল। এতে প্রতিবছর জলাবদ্ধতায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হতো। এ বছর আবারও খননকাজ শুরু হয়েছে। এতে এলাকার কৃষকেরা খুব খুশি।