হেলিকপ্টারে পালিয়ে না গেলে আপনার যে কী অবস্থা হতো: মিয়া গোলাম পরওয়ার

মাদারীপুরে কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। সোমবার বিকেলে মাদারীপুর শহরের লেকপাড়ের স্বাধীনতা অঙ্গনেছবি: প্রথম আলো

শেখ হাসিনা ভারতে বসে এখনো ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, ‘কোনো ষড়যন্ত্রে কাজ হবে না। দেশের লোকদের (আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের) অডিও-ভিডিও বার্তায় বলে “তোমরা অস্থির হইও না, আমি যেকোনো সময় ঢুকে পড়ব।” আরে, ঢুকে পড়ে দেখেন জনগণ আপনার কী করে। ৫ আগস্ট হেলিকপ্টারে পালিয়ে না গেলে গণভবনে লাখ লাখ মানুষ যেভাবে প্রবেশ করছিল, আপনার যে কী অবস্থা হতো, এ দেশের জনগণ-জাতি ও দুনিয়া দেখতে পেত।’

আজ সোমবার বিকেলে মাদারীপুর শহরের লেকপাড়ের স্বাধীনতা অঙ্গনে জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনাকে সব খুনের মাস্টারমাইন্ড উল্লেখ করে সভায় গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘লগি–বইঠার আমল থেকে ২০২৪-এর ৫ আগস্ট পর্যন্ত হাজার হাজার খুনের সমস্ত দায় শেখ হাসিনার।’

সংস্কার ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন নয় উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, সংস্কার না করে এখন নির্বাচন দেওয়া হলে ২০১৪, ১৮ ও ২৪-এর মতো ভোট হবে। ছাত্র–জনতার এই রক্ত বৃথা যাবে। নির্বাচন ভালো করতে গেলে কমপক্ষে নির্বাচন কমিশন, পুলিশ বিভাগ, সিভিল বিভাগ, বিচার বিভাগসহ ৭ থেকে ৮টি জায়গায় সংস্কার করতে হবে। এরপর সরকার নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে পারেন।

মাদারীপুর শহরের লেকপাড়ের স্বাধীনতা অঙ্গনে জামায়াতের কর্মী সম্মেলন
ছবি: প্রথম আলো

গত ১৫ বছর দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেননি মন্তব্য করে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘১৫ বছর নতুন প্রজন্মের যারা ভোটার হয়েছে, তারাসহ আমরা সবাই তিনটি নির্বাচনে ভোট দিতে পারি নাই। ভোটের দিন সকালে জনগণ ভোট দিতে যাবে, তখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, পুলিশ লীগ বাধা দিয়েছে। বলেছে ভোট হয়ে গেছে, তোমরা বাড়ি চলে যাও। যারা শেখ হাসিনা সরকারের বিরোধিতা করেছে, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। যারা সরকারবিরোধী আন্দোলন করেছে, তাদের চাকরি হয়নি।’

আরও পড়ুন

গোলাম পরওয়ার বলেন, বিভিন্ন পরীক্ষায় পাস করেও যখন পুলিশি তদন্ত হয়, তখন বলা হয় জামায়াত-শিবির পরিবারের সদস্য, তাই সরকারি কোনো চাকরি দেওয়া হয়নি। বিরোধী দল হলেই তাদের আর সরকারি চাকরি দেওয়া হবে না। ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরিসহ সব সুযোগ-সুবিধা একটি দল ও একটি পরিবারের কাছেই গত ১৫টি বছর জিম্মি ছিল।

জামায়াতে ইসলামী মাদারীপুর জেলা শাখার আমির মাওলানা মোখলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান, ফরিদপুরের সহকারী অঞ্চল পরিচালক মো. দেলোয়ার হুসাইন, ফরিদপুর অঞ্চলের টিম সদস্য সামচুল ইসলাম আল বরাটি, মাদারীপুর জেলা শাখার সেক্রেটারি হাফেজ এনায়েত হোসেন, সহকারী সেক্রেটারি মিজানুর রহমান প্রমুখ।

আরও পড়ুন