কোম্পানীগঞ্জের একটি বুথে দুই ঘণ্টায় কোনো ভোট পড়েনি, এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযোগ

ভোটার শূন্য নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের সিরাজপুর প্রগ্রেসিভ লাইন্স একাডেমি হাই স্কুল কেন্দ্র। আজ সকাল দশটায়ছবি প্রথম আলো

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম দুই ঘণ্টায় একটি কেন্দ্রের একটি বুথে কোনো ভোট পড়েনি। আজ বুধবার সকাল ১০টায় উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নের সিরাজপুর প্রগ্রেসিভ লাইন্স একাডেমি হাইস্কুল কেন্দ্রের ৬ নম্বর বুথে এই চিত্র দেখা যায়।

কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সবুজ কুমার বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, সকাল ১০টা পর্যন্ত তাঁর কেন্দ্রের ২ হাজার ৫৪৩ ভোটারের মধ্যে ৩৭ জন ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে কেন্দ্রের ৬ নম্বর বুথে প্রথম ২ ঘণ্টায় একটিও ভোট পড়েনি। ওই বুথে ভোটারসংখ্যা ৪৩১।

চেয়ারম্যান পদে দোয়াত–কলম প্রতীকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান অভিযোগ করেছেন, সকালে ভোট শুরুর আগেই উপজেলার ৭১টি ভোটকেন্দ্রের প্রায় সব কটি থেকে তাঁর এজেন্টদের বের করে দিয়েছেন আনারস প্রতীক প্রার্থীর সমর্থকেরা। চর এলাহীতে তাঁর এজেন্টের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।

সকাল ১০টায় সরেজমিন সিরাজপুর প্রগ্রেসিভ লাইন্স একাডেমি হাইস্কুল কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটারশূন্য কেন্দ্রটিতে ভোটারের অপেক্ষায় ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা বসে আছেন। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা জানান, সকাল থেকে ভোটারের উপস্থিতি একেবারে হাতে গোনা। তবে বেলা বাড়লে ভোটারের উপস্থিতি বাড়তে পরে বলে মন্তব্য করেন তিনি। কেন্দ্রটির সাতটি বুথের কোনোটিতে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার সমর্থিত প্রার্থী গোলাম শরীফ চৌধুরীর আনারস প্রতীক ছাড়া অন্য কোনো প্রতীকের এজেন্ট দেখা যায়নি। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা দাবি করেন, চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী একজন ছাড়া অন্য কারও এজেন্ট আসেননি।

আনারস ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর এজেন্ট দেখা যায়নি পাশের চর কাঁকড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও। কেন্দ্রটিতে ভোট পড়ার হার কিছুটা বেশি লক্ষ করা গেলেও প্রথম দুই ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ১৮৭টি। কেন্দ্রটিতে ভোটারসংখ্যা ২ হাজার ৯১৭। আনারস ছাড়া অন্য কোনো প্রতীকের এজেন্ট না থাকার বিষয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইব্রাহিম প্রথম আলোকে বলেন, আনারস প্রতীকের এজেন্ট ছাড়া অন্য কোনো প্রতীকের এজেন্ট আসেননি।

দোয়াত–কলম প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কেন্দ্র পরিদর্শনে থাকা জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযোগ করার পর প্রার্থীকে বলা হয়েছে কোন কোন কেন্দ্রে এজেন্টদের প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়েছে, সেটি জানানোর জন্য। তিনি সেটি জানাতে পারেননি। জেলা প্রশাসক বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের কোনো এজেন্টকে যাতে কেউ বের করে দিতে না পারেন, সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ভোট পরিদর্শনে থাকা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, অনেক কেন্দ্রে দোয়াত–কলম প্রতীকের প্রার্থীর এজেন্ট আসেনি। এজেন্ট যদি কেন্দ্রে না আসে সে ক্ষেত্রে তো কিছু করার নেই।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী প্রতিযোগিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই মো. শাহাদাত হোসেন (টেলিফোন), বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার সমর্থিত প্রার্থী গোলাম শরীফ চৌধুরী (আনারস), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান (দোয়াত–কলম), যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ওমর আলী (মোটরসাইকেল)। ভোটের প্রচারণার শুরু থেকেই কাদের মির্জার সমর্থিত প্রার্থীর লোকজনের বিরুদ্ধে প্রচারে বাধা দান এবং ভোটারদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করে আসছেন দোয়াত–কলম প্রতীকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান।