আট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় চা পুরস্কার দিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী

আটটি ক্যাটাগরিতে আট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ‘জাতীয় চা পুরস্কার-২০২৩’ দেওয়া হয়েছে। রোববার দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের বিটিআরআই উচ্চবিদ্যালয় মাঠেছবি: শিমুল তরফদার

জাতীয় চা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে জাতীয় চা পুরস্কার-২০২৩। আজ রোববার দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে তৃতীয় জাতীয় চা দিবসের অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার তুলে দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

অনুষ্ঠানে একরপ্রতি সর্বোচ্চ উৎপাদনকারী চা–বাগান ক্যাটাগরিতে শ্রীমঙ্গলের ভাড়াউড়া চা–বাগান, সর্বোচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন চা উৎপাদনকারী বাগান ক্যাটাগরিতে হবিগঞ্জের মধুপুর চা–বাগান, শ্রেষ্ঠ চা রপ্তানিকারক ক্যাটাগরিতে আবুল খায়ের কনজ্যুমার প্রোডাক্টস লিমিটেড, শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্রায়তন চা উৎপাদনকারী ক্যাটাগরিতে পঞ্চগড়ের মো. আনোয়ার সাদাত সম্রাট, শ্রমিক কল্যাণের ক্যাটাগরিতে শ্রীমঙ্গলের জেরিন চা–বাগান, বৈচিত্র্যময় চা–পণ্য বাজারজাতকরণের ক্যাটাগরিতে কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেট লিমিটেড, দৃষ্টিনন্দন ও মানসম্পন্ন চা মোড়কের ক্যাটাগরিতে গ্রিন ফিল্ড টি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, শ্রেষ্ঠ চা–পাতা চয়নকারী (চা–শ্রমিক) ক্যাটাগরিতে নেপচুন চা–বাগানের উপলক্ষী ত্রিপুরাকে জাতীয় চা পুরস্কার-২০২৩ তুলে দেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

৪ জুন জাতীয় চা দিবস। ‘চা দিবসের সংকল্প, শ্রমিকবান্ধব চা–শিল্প’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ সকাল সোয়া ১০টায় শ্রীমঙ্গলের বিটিআরআই উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জাতীয় চা দিবসের অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বিশেষ অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবদুস শহীদ।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশীয় চা সংসদের সভাপতি কামরান টি রহমান, টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শাহ মঈনুদ্দিন হাসান, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘জাতীয় চা দিবসের অনুষ্ঠান ঢাকায় হওয়ার কথা থাকলেও আমরা প্রোগ্রামটি শ্রীমঙ্গলে নিয়ে এসেছি। আমরা শ্রীমঙ্গলকে হাইলাইট করার জন্য এটা করেছি। শ্রীমঙ্গলকে বাংলাদেশের প্রাণকেন্দ্র বলা চলে। দেশে প্রতিবছরই ৫ থেকে ৭ শতাংশ চা উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এর চেয়ে বেশি চা খাওয়ার পরিমাণ বাড়ছে। সবাই চা খাচ্ছেন, খাওয়াচ্ছেন। চা সর্বোচ্চভাবে পানীয় হিসেবে প্রচলিত আছে আমাদের দেশে।’

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চা–শিল্প আমরা যেন ভবিষ্যতে আরও সামনে নিয়ে যেতে পারি, সেই লক্ষ্যে সবাই মিলে কাজ করতে হবে। আমরা চা–শিল্পকে এগিয়ে নিতে চাই। এখানে শুধু চা–শিল্পই নয়, এর সঙ্গে জড়িত আছেন প্রায় দেড় লাখ শ্রমিক। তাঁদের ভাগ্য এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত। আমরা এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে চা–বাগানমালিক ও চা–শ্রমিককে পুরস্কৃত করেছি।’

টিপু মুনশি বলেন, ‘অনেক বছর ধরে চা–শ্রমিকদের বেতন নিয়ে কথা চলছিল, সেটাও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে বসে মালিক পক্ষকে একতরফা চাপিয়ে বেতন নির্ধারণ করে দিয়েছেন। চা–শ্রমিকেরাও সেই বেতন মেনে নিয়েছেন।’

অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, চায়ের উৎপাদন বাড়াতে উত্তরবঙ্গে নতুন নতুন চা–বাগান করা হচ্ছে। এখানেও অনেক চা উৎপাদিত হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে শ্রীমঙ্গলের চা জাদুঘরে সংরক্ষিত চা–বাগানের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও চা–শ্রমিকদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র প্রদর্শন করা হয়। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও পরিবেশিত হয়।