ঘন কুয়াশায় মাঝযমুনায় দিক হারায় বরযাত্রীসহ নৌকা, ১২ ঘণ্টা পর উদ্ধার

আজ বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে বরযাত্রীসহ নৌকাটিকে নিরাপদে মাদারগঞ্জের জামথল ঘাটে ভেড়ানো হয়ছবি: প্রথম আলো

পৌষের রাতের অন্ধকার ছাপিয়ে ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায় যমুনা নদী। এর মধ্যেই বর-কনেসহ ৪৭ জন যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা গন্তব্যে যাচ্ছিল। হঠাৎ দিক হারিয়ে নদীর মাঝখানের একটি চরে আটকে যায় নৌকাটি। গতকাল শুক্রবার রাত নয়টার দিকে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলাসংলগ্ন যমুনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে। উদ্ধারে সহায়তা চেয়ে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে সহায়তা চাওয়া হয়। তবে ঘন কুয়াশার কারণে নৌকাটির সন্ধান মিলছিল না।

প্রায় ১২ ঘণ্টা পর আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় নৌকাটির খোঁজ পাওয়া গেছে। বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে সেটিকে নিরাপদে মাদারগঞ্জের জামথল ঘাটে ভেড়ানো হয়। দীর্ঘ সময় নদীতে আটকে থেকে এক বৃদ্ধ বরযাত্রী অসুস্থ হলেও বাকিরা সুস্থ আছেন বলে জানানো হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মাদারগঞ্জ উপজেলার তারতাপাড়া এলাকার সানোয়ার হোসেনের ছেলে নিলয় হাসানের (২০) বিয়ের আয়োজন ছিল কনের এলাকা বগুড়া শহরের সাবগ্রাম চারমাথায়। এ উপলক্ষে গতকাল সকালে ৪৬ জন বরযাত্রী নিয়ে নৌকায় ওই এলাকায় যান তাঁরা। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বর-কনেসহ সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কালীতলা ঘাট থেকে মাদারগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেয় নৌকাটি। যমুনা নদীর মাঝখানে এসে ঘন কুয়াশায় হঠাৎ দিক হারিয়ে ফেলেন মাঝি।

কোনো পথ খুঁজে না পেয়ে রাত ১১টার দিকে নৌকা থেকে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করেন বরযাত্রীরা। এর পর থেকে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে নদীতে কেউ যেতে পারছিল না। পরে আজ সকালে ফায়ার সার্ভিস স্থানীয় মাঝিদের নৌকা পাঠিয়ে আটকে পড়া বরযাত্রীদের অবস্থান নিশ্চিত হয়। পরে তাঁরা নৌকাটি নিয়ে মাঝিরা জামথল ঘাটের দিকে রওনা হন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন মাদারগঞ্জের ফায়ার সার্ভিসের লিডার রইস উদ্দিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাতেই বিষয়টি আমাদের জানানো হয়; কিন্তু ওই সময় কোনোভাবেই নদীতে যাওয়া যায়নি, অনেক বেশি ঘন কুয়াশা ছিল, কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। সকালেও ঘন কুয়াশা ছিল। পরে আমরা স্থানীয় মাঝিদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাঁদের সহযোগিতায় আমরা নৌকাটির অবস্থান জানি। আমাদের নির্দেশনায় মাঝিরা নৌকাটিকে খুব ধীরে নদীর পাড়ে নিয়ে আসে।’