পানি না পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে লাঞ্ছিত করলেন ব্যবসায়ী

গোপালগঞ্জ জেলার মানচিত্র

পাইপলাইনে পানি সরবরাহ না পেয়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় কুশলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন সরদারকে এক ব্যবসায়ী  লাঞ্ছিত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ইউপি চেয়ারম্যান আজ মঙ্গলবার সকালে টুঙ্গিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। গত রোববার উপজেলার খালেক বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

ইউপি চেয়ারম্যানকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠা ওই ব্যবসায়ীর নাম কামরুল ইসলাম। তিনি উপজেলার কুশলী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও ওই ইউনিয়নের খালেক বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক।

ওই বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ এভিএম ওয়াটার প্ল্যান্ট প্রজেক্টে অধীনে দুই বছর আগে কুশলা ইউনিয়নে পানি সরবরাহের জন্য পাম্প বসানো হয়। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। এই পাম্প দিয়ে লাইনের মাধ্যমে ইউনিয়নের বাসিন্দাদের বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি সরবরাহ করা হয়। কিন্তু তিন মাস ধরে ঠিকমতো পানি পাচ্ছিলেন না ৬, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের  বাসিন্দারা। অথচ পানির বিল বাবদ প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে ওই সব বাসিন্দার কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছিল। ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন সরদারকে এলাকাবাসী ও কামরুল একাধিকবার বিষয়টি জানালেও কোনো সমাধান হয়নি।

পানি সরবরাহের বিষয়টি নিয়ে গত রোববার সন্ধ্যায় খালেক বাজারে ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে কামরুল ইসলামের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে পায়ের জুতা খুলে ইউপি চেয়ারম্যানকে মারতে শুরু করেন কামরুল। তখন স্থানীয় ব্যক্তিরা কামরুল ইসলামকে থামিয়ে দিলে ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন ওই স্থান ত্যাগ করেন।

ঘটনার পর থেকে ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন। এ কারণে চেয়ারম্যানকে জুতাপেটা করার অভিযোগের বিষয়ে চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে  কামরুল ইসলামের স্ত্রী লাইজু বেগম বলেন, ‘চেয়ারম্যানকে জুতাপেটা করা হয়নি। গত তিন মাস ইউপি থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা পানি আমরা পাচ্ছি না। চেয়ারম্যানের সঙ্গে এই নিয়ে কামরুলের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়েছে। আর এ ঘটনার পর গত সোমবার সন্ধ্যায় চেয়ারম্যানের ভাই জাহাঙ্গীর সরদারের ছেলে হৃদয়সহ ১০-১৫ জন লোক আমাদের দোকানের সামনে থাকা কয়েকটি ব্যানার ও ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলেছেন। এ ছাড়া তাঁরা আমার স্বামী ও আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।’

এ বিষয়ে কুশলী ইউপির চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যায় আমি গাড়ি থেকে নেমে এক আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে কথা বলছিলাম। হঠাৎ কামরুল জুতা দিয়ে আমার পেছনে আঘাত করে চলে যান। পরে আমিও বাড়ি চলে আসি। এ ছাড়া আমার লোকজনকে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটানোর নির্দেশ দিয়েছি। তাঁরা নিজেদের দোষ ঢাকতে বিভিন্ন রকম কেচ্ছাকাহিনি রটাচ্ছেন। তবে পানির সরবরাহের মিটারে সমস্যা হয়েছে। তিন লাখ টাকা দিয়ে নতুন মিটার কেনা হয়েছে। এখন পানি সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। এ ঘটনায় আমি থানায় একটি অভিযোগ করেছি।’

টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় চেয়ারম্যান মঙ্গলবার সকালে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় জড়িত কামরুল ইসলামকে আটকের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।