পাবনায় স্বামীকে জিম্মি করে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার ১১ দিনেও আসামি গ্রেপ্তার হয়নি

ধর্ষণ
প্রতীকী ছবি

পাবনার সুজানগর উপজেলায় অস্ত্রের মুখে স্বামীকে জিম্মি করে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার ১১ দিনেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। এতে ভুক্তভোগী দম্পতি ও স্থানীয় লোকজন ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাঁরা দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বলেন, ঘটনার পর থেকে তাঁর স্ত্রী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তিনিও মানসিক অস্বস্তির মধ্যে আছেন। আসামিদের গ্রেপ্তার করে বিচার নিশ্চিত করা হলে কিছুটা হলেও সান্ত্বনা পেতেন। কিন্তু কেন আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না, তা বুঝতে পারছেন না।

অভিযোগ রয়েছে, আসামিদের বয়স ২০ বছরের ওপরে হলেও তাঁরা এলাকায় ‘কিশোর গ্যাং’-এর সদস্য হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রচ্ছায়ায় তাঁরা মাদক ব্যবসা, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত। পুলিশের ভাষ্য, আসামিরা এলাকার চিহ্নিত বখাটে। ঘটনার পর থেকেই তাঁরা গা ঢাকা দিয়ে আছেন। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করেও তাঁদের সন্ধান মিলছে না।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, এলাকাটি দুর্গম চরাঞ্চল। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন। তবে তাঁদের কাজও চলছে। খুব দ্রুতই আসামিরা গ্রেপ্তার হবেন বলে আশা করছেন।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ওই দম্পতি ইসলামি জালসা থেকে তাঁদের এক স্বজনের বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে কয়েক যুবক অস্ত্রের মুখে স্বামীকে জিম্মি করে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করেন। পরে স্থানীয় লোকজন এসে তাঁদের উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর স্বামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ছয়জনকে আসামি করে আমিনপুর থানায় মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন সুজানগর উপজেলার সেলিম প্রামাণিক (২৩), মো. শরীফ (২৪), রাজীব সরদার (২১), রুহুল মণ্ডল (২৬), লালন সরদার (২০) ও সিরাজুল ইসলাম (২৩)।

আজ সোমবার দুপুরে ভুক্তভোগী দম্পতির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘটনার পর মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য তাঁদের ওপর চাপ ছিল। কিন্তু গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশের পর আর কোনো চাপ নেই। মামলা তুলে নেওয়ার কথা বলতে কেউ তাঁদের কাছে আসেননি। তবে ঘটনার ১১ দিনেও আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় তাঁরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।

ভুক্তভোগী দম্পতির বাড়ি বেড়া উপজেলায়। সেখানে তাঁদের তিন প্রতিবেশী আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁদের একজন বলেন, বর্তমান সময়ে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বহু আসামি গ্রেপ্তার করছে। কিন্তু ঘটনার ১১ দিনে এত বড় একটি ঘটনায় আসামি গ্রেপ্তার না হওয়া রহস্যজনক।

জানতে চাইলে আমিনপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল কুদ্দুস বলেন, ঘটনার পর থেকে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব ও ঢাকার অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের একটি দল আসামিদের ধরতে মাঠে রয়েছে। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করেও তাঁদের অবস্থান শনাক্ত করা যাচ্ছে না। তাই ধরতে একটু সময় লাগছে। তবে আশা করছেন, খুব দ্রুতই তাঁদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।