জমি নিয়ে বৃদ্ধাকে মারধরের ভিডিও ফেসবুকে, থানায় অভিযোগ

মৌলভীবাজার জেলার মানচিত্র

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আবদুস সামাদ (২৭) নামের এক যুবক তাঁর দাদি লায়লী বেগমকে (৭০) মারধর করেন। এ সময় প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন ব্যক্তি নির্যাতনের ঘটনাটি ভিডিও করে রাখেন। ১৬ ডিসেম্বর কুলাউড়া পৌর শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর লস্করপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তবে গতকাল মঙ্গলবার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

এ ঘটনায় ১৭ ডিসেম্বর নির্যাতনের শিকার লায়লী বেগম কুলাউড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ বলছে, আদালতের নির্দেশনা (প্রসিকিউশন) পেলে অভিযোগটি মামলা হিসেবে নেওয়া হবে। লায়লী বেগম উত্তর লস্করপুর এলাকার সুলতান মিয়ার স্ত্রী।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উত্তর লস্করপুরের মৃত সুলতান মিয়ার দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। তাঁদের মধ্যে এক ছেলে মারা গেছেন। বড় ছেলে জয়নাল মিয়া বাবার রেখে যাওয়া সাড়ে সাত শতক জমি অনেক আগেই বিক্রি করেছেন। তবে লায়লী বেগমের নামে বর্তমানে সাড়ে ৯ শতক জমি আছে। সম্প্রতি মায়ের জমি তিন বোনসহ নিজের নামে সমান অংশে ভাগ-বাঁটোয়ারার কথা বলে লায়লী বেগমের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেন জয়নাল। তবে কৌশলে জয়নাল প্রায় সাড়ে পাঁচ শতক জমি নিজের নামে রেকর্ড করে নেন।

এ দিকে ১৬ ডিসেম্বর জয়নালের ছেলে আবদুস সামাদ বাড়িতে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এ সময় লায়লী বেগম বাধা দিতে গেলে সামাদ উত্তেজিত হয়ে তাঁর দাদিকে বকাঝকা করেন। একপর্যায়ে সামাদ তাঁর দাদিকে মারধর করেন। এ সময় সামাদের মা আমেনাও লায়লী বেগমের ওপর চড়াও হন।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ২ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সামাদ ধাক্কা মেরে লায়লী বেগমকে মাটিতে ফেলে দেন। লায়লী উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলে সামাদ তাঁকে লাথি ও কিল-ঘুষি মারেন। এ সময় সামাদ লায়লীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘ডাক, তোর মেয়েদের ডাক। দেখি কে বাঁচাইতে আসে।’

এ ঘটনার পরদিন ১৭ ডিসেম্বর লায়লী বেগম বাদী হয়ে আবদুস সামাদ, আমেনা বেগমসহ চারজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুস সামাদ মুঠোফোনে বলেন, তাঁদের জমিতে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করতে গেলে তাঁর দাদি লায়লী ও তাঁর ফুফুরা বাধা দেন। এ সময় তিনি লায়লীকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালান। তবে মারধর ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

জানতে চাইলে কুলাউড়া থানার উপপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, লায়লী বেগমের অভিযোগের বিষয়ে মামলা রেকর্ডের জন্য আদালতের নির্দেশনা (প্রসিকিউশন) চাওয়া হয়েছে। সেটা পেলে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।