বগুড়ায় সিল মেরে ব্যালট বাক্সে ঢোকানোর দায়ে প্রার্থীর এজেন্টকে কারাদণ্ড

বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রে বাইরে থেকে আনা ব্যালট পেপার বাক্সে ঢোকানোর অভিযোগে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও প্রার্থীর এজেন্টকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাঝপাড়া কুসুমকলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেছবি: প্রথম আলো

বগুড়ার গাবতলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্যালট পেপার বাইরে থেকে সিল মেরে বাক্সে ঢোকানোর দায়ে এক প্রার্থীর এজেন্টকে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভোটগ্রহণ শেষে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আফসানা এই সাজা দেন। এ ঘটনায় আটক প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শাহজাহান আলীর বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম এমদাদুল হক (৪৫)। তিনি গাবতলী উপজেলার রামেশ্বরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য। তাঁর বাড়ি একই ইউনিয়নের মাঝপাড়া গ্রামে। গতকাল সকালে গাবতলী উপজেলার মাঝপাড়া কুসুমকলি ভোটকেন্দ্রে আনারস প্রতীকের প্রার্থী ও বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খানের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন।

পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল মাঝপাড়া কুসুমকলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শাহজাহান আলীর সহায়তায় আনারস প্রতীকের প্রার্থী রফি নেওয়াজ খানের এজেন্ট এমদাদুল হক ৯০০ ব্যালট পেপার কেন্দ্রের বাইরে নিয়ে ৩০০ ব্যালটে আনারসে এবং ৬০০ ব্যালটে  ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের দুই প্রার্থীর প্রতীকে সিল মারেন। বাইরে থেকে সিল মারা এসব ব্যালট বাক্সে ভরানোর সময় পুলিশ হাতেনাতে এমদাদুল হক ও শাহজাহান আলীকে আটক করে। এ সময় ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের দুই প্রার্থীর প্রতীকে সিল মারা ৬০০ ব্যালট ও অনারস প্রতীকে সিল মারা ৩০০টি ব্যালট-সংবলিত তিনটি মুড়ি বই জব্দ করা হয়। আটকের আগেই আনারস প্রতীকে সিল মারা ৩০০ ব্যালট পেপার বাক্সে ঢোকানো হয়।

আরও পড়ুন

এদিকে বুধবার রাতে ঘোষিত ফল অনুযায়ী, ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা অরুণ কান্তি রায় ৪১ হাজার ৬০৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। আর অনারস প্রতীকে রফি নেওয়াজ খান পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৭৫২ ভোট। গাবতলী উপজেলায় মোট ২ লাখ ৮০ হাজার ৯২৮ জন ভোটারের মধ্যে ৯১ হাজার ২৮ জন ভোট দিয়েছেন। এখানে ভাইস চেয়ারম্যান পদে গাবতলী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের নেত্রী শামিমা আকতার বিজয়ী হয়েছেন।

গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এমদাদুল হককে এক বছর করাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে জাল ভোট দিতে সহায়তার অপরাধে আটক প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শাহজাহান আলী ও প্রার্থীর এজেন্ট এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার প্রস্ততি চলছে।