নাটোরের নলডাঙ্গা পৌরসভায় ঈদ উপলক্ষে ভিজিএফের চাল নিতে এসে অন্তত ১৫ জন হতদরিদ্র ব্যক্তি মারধরের শিকার হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে পৌর ভবনের বারান্দায় এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত চারজনকে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নলডাঙ্গা থানাসূত্রে জানা যায়, আজ দুপুরে পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৪৯৪ জন হতদরিদ্র ব্যক্তির মধ্যে ভিজিএফের চাল বিতরণ চলছিল। চাল বিতরণের তদারকি করছিলেন ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম। এ সময় পূর্ববিরোধের জের ধরে পৌর মেয়র মনিরুজ্জামান সেখানে গিয়ে কাউন্সিলর শরিফুল ইসলামের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় লিপ্ত হন।
একপর্যায়ে মেয়র ওই কাউন্সিলরের কয়েকজন সমর্থকের বিরুদ্ধে তালিকায় নাম না থাকার অভিযোগ তোলেন। হঠাৎ করেই মেয়র অভিযুক্ত কয়েকজনকে চড়থাপ্পড় মারতে শুরু করেন। এ সময় চাল নিতে আসা অন্যরা তাঁকে মারতে বাধা দিলে মেয়র ও তাঁর অনুসারীরা ধারালো ক্ষুর, লোহার পাইপ দিয়ে চাল নিতে আসা অন্তত ১৫ ব্যক্তিকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এতে গুরুতর আহত হন সোনাপাতিল গ্রামের মনিরুল ইসলাম (২২), মিঠুন আলী (৩৫), রকি আলী (২৫) ও জেলার হোসেন (৩০)। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে পাঠায়। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে আমার সঙ্গে মেয়রের বিরোধ রয়েছে। একটি মামলার কারণে মেয়র আমাকে দুই মাস ধরে ভাতা দেননি। তিনি আমার মাধ্যমে ভিজিএফ চাল বিতরণ করতে চান না। আমি জেলা প্রাশাসক ও ইউএনওকে বলে আমার ওয়ার্ডের দুস্থদের মধ্যে চাল বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়র ও তাঁর লোকজন আমার এলাকার লোকজনকে মারধর করে আহত করেন। কারও কারও বেশ কয়েকটি করে সেলাই দিতে হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য মেয়র মনিরুজ্জামানকে আজ বিকেল পাঁচটার দিকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন ধরেননি।
নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে জানান, পৌরসভায় ভিজিএফের চাল বিতরণ নিয়ে কাউন্সিলর ও মেয়রের লোকজনের মধ্যে মারামারি হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। কী কারণে মারামারি, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কোনো পক্ষই লিখিত অভিযোগ থানায় জমা দেয়নি। তবে শুনেছি, কাউন্সিলরের কিছু লোকের কার্ড ছিল না। তবু তাঁরা চাল নিতে এসেছিলেন। মেয়র তাঁদের বাধা দিলে গোলমাল হয়।