রংপুরে আদালতে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
রংপুরে কোটা সংস্কারের আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল–তাহির নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে ফল ব্যবসায়ী মেরাজুল ইসলাম নিহতের ঘটনায় আরও একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় রংপুর মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ নেতা, সিটির কাউন্সিলরসহ ২১ জন আসামি করা হয়েছে।
আজ রোববার রংপুরের কোতোয়ালি মেট্রো থানার আমলি আদালত ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে পৃথক দুটি মামলা করেন শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল-তাহিরের বাবা আবদুর রহমান ও ফল ব্যবসায়ী মেরাজুল ইসলামের মা আম্বিয়া খাতুন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে গত ১৯ জুলাই বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মিছিল বের হলে রংপুর সিটি বাজারের সামনে পুলিশের গুলিতে তাঁরা মারা যান। এ ঘটনায় দুটি হত্যা মামলা করার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী আফতাব হোসেন ও মেজবাউল হক।
শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল-তাহির হত্যা মামলার আসামিরা হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক পরাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, রংপুর রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি (সদ্য অবসরে) আবদুল বাতেন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (সদ্য অবসরে) মো. মনিরুজ্জামান, রংপুর মেট্রোর অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার উত্তম কুমার পাল, রংপুর মেট্রোর (এডিসি ক্রাইম) উৎপল কুমার রায়, রংপুর মেট্রোর এডিসি (ডিবি) নুর ইসলাম পাটোয়ারী, মেট্রো কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোন্তাসির বিল্লাহ, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাসিমা জামান।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাশেম, জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এ কে এম ছায়াদত হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক মাজেদ আলী, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক ও আবদুল হক প্রামাণিক, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাফিয়ার রহমান, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল, সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রফিকুল আলম, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম তোতা, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহাদৎ হোসেন, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহাজাদা আরমান, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কানা হারুন, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ইদ্রিস আলী, জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মীণ চন্দ্র দাস ও মেহেদী হাসান সিদ্দিকী, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন, যুবলীগ কর্মী ডিজেল আহমেদ, ২৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাব্বির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক তানিম আহসান চপল, আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগের কর্মী মো. মানিক, শাহজাহানুর ইসলাম, রিপন বাবু, শেখ আসিফ ও মো. মামুন।
নিহত আবদুল্লাহ আল–তাহির ঢাকায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গ্লাস অ্যান্ড সিরামিকস অষ্টম পর্বের শিক্ষার্থী ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে গত ১৯ জুলাই বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মিছিল বের হলে রংপুর সিটি বাজারের সামনে পুলিশের গুলিতে মারা যান।
একই দিন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মিছিলে অংশ নেওয়া সিটি বাজারের ফল ব্যবসায়ী মেরাজুল ইসলাম সিটি বাজারের সামনে পুলিশের গুলিতে মারা যান। এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলার বাদী মেরাজুলের মা আম্বিয়া খাতুন। এ মামলায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জেলা ও মহানগরের আওয়ামী লীগ নেতা, সিটির কাউন্সিলরসহ ২১ জনকে আসামি করা হয়েছে।